আজ

  • বৃহস্পতিবার
  • ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উদ্বোধনের ৯ বছর পরও পূর্ণতা পায়নি বিলোনিয়া স্থল বন্দর,চলছে একমুখী রপ্তানী কার্যক্রম

  • ফেনী ট্রিবিউন রিপোর্ট
  • আবু ইউসুফ মিন্টু :
    ফেনীর পরশুরামের বিলোনিয়া স্থল বন্দর ২০০৯ সালে ঝাঁকজমকপুর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চালু হলেও অবকাঠামো বলতে কিছুই নেই। উদ্বোধনের পর থেকে পরিত্যাক্ত একটি ভবনে বন্দর শুল্ক ষ্ট্রেশানের কার্যক্রম চলে আসছে।
    উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে বন্দরের জন্য পুলিশ ইমিগ্রেশন অফিস ভবন নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। কিন্তু ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষি বাহীনি (বিএসএফ) বাধার কারনে বর্তমানে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
    অপরদিকে বন্দরের ওপেন ইয়ার্ড সহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহন কার্যক্রম পক্রিয়াধীন রয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন নিশ্চিত করেছে।

    দীর্ঘ ৯ বছর অতিবাহিত হলেও অধ্যবদি বন্দরের অবকাঠামোগত কোন উন্নতি হয়নি। বরং নানা সমস্যায় স্থল বন্দর স্থবিরতা বিরাজ করছে। বন্দরের নেই কোন নিজস্ব ভবন। ফলে বন্দরটি আমদানী রফতানীকারক নয়, খোদ বন্দর সংস্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্যও ভোগান্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
    শুল্ক ষ্টেশনের রাজষ¦ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান চলতি বছরে একমুখী রপ্তানি কারনে ১৬/১৭ অর্থ বছরে ৫২ কোটি ১৫ লাখ ৩ হাজার ৬ শ ৮৯ টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে।
    ১৭/১৮ অর্থ বছরেও ২১ কোটি ৮৭ লাখ ৩ হাজার ১ শ ৪৮ টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে।

    এছাড়াও ভ্রমন করও রয়েছে বিপুল পরিমানের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে ১৬/১৭ অর্থ বছরে ১১ লাখ ৩৯২ হাজার ৫ শ টাকা বৈদেশিক মুদ্রা । ১৭/১৮ অর্থ বছরে প্রায় ৯ লাখ টাকা ভ্রমন কর আয় হয়েছে।
    বন্দরের পুলিশ ইমিগ্রেশন অফিস এর কর্মকর্তা কর্মচারী ও শুল্ক ষ্টেশানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের যাত্রীদের হয়রানির কারনে লোকজন ওই মুহুরী ঘাট অর্থাৎ বিলোনিয়া বন্দর দিয়ে যাতায়াত করতে অনিহা দেখাচ্ছে।
    পরশুরাম পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুর রসুল স্বপন অভিযোগ করেন পুলিশ কর্মকর্তাদের টাকা না দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রেখে হয়রানি করে থাকেন। তাছাড়াও শুল্ক ষ্টেশানের কর্মকর্তা ভ্রমন করের রসিদ এর পরিবর্তে চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দেয়ার পরও হয়রানি করে থাকেন। বন্দর এলাকায় ব্যাংকের কোন শাখা না থাকায় যাত্রীদের ও রপ্তানিকারকদেরকে প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে ।

    বিলেনিয়া স্থল বন্দর চালু পর থেকে একমুখী বাণিজ্য চলছে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাচ্ছে শুধু মাত্র পাথর, ঢেউটিন, খৈল ।
    জানা যায় বর্তমানে বিলোনিয়া স্থল বন্ধরে কর্মকর্তা কর্মচারী দরকার ১৭ জন অথচ কর্মরত রয়েছে মাত্র ৪ জন।
    ২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর, শুল্ক ষ্টেশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্থল বন্দর হিসাবে উদ্ভোধন হয়।
    বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শুধু মাত্র একমুখী রপ্তানী কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছর অতিবাহিত হলেও নির্মিত হয়নি নিজস্ব ভবন, শেড, কন্টেইনার, টার্মিনাল, গুদাম, রাসায়নিক পরীক্ষাগার, স্টাফকোয়ার্টার, নিরাপত্তারক্ষীদের ডরমিটরী সহ কোন ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি।
    তাছাড়া সড়কপথ আরো সম্প্রসারণ বিভিন্ন অবকাঠামো,পণ্য রাখার গোডাউন ও পরীক্ষাগার না থাকায় মালামাল লোড আনলোডে সমস্যা হচ্ছে। এতে করে ভোগান্তির শেষ নেই রপ্তানীকারদের।
    শ্রমিকদের নেই বিশ্রামের কোন স্থান। বন্দর চালু হওয়ার পর সরকার এ খাত থেকেই বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায় করলেও অবকাঠামোগত উন্নয়নে কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
    গত কয়েক বছরে এই বন্দর দিয়ে ভারতের সাথে (শুধু একমুখী বাণিজ্য) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানী করে প্রায় কয়েক কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে বলে বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

    আমদানী ও রপ্তানীকারক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ জুলফিকার আলী ভুট্টো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কাগজে কলমে এটি স্থলবন্দর হলেও এখনও শুল্ক ষ্ট্রেশনই রয়ে গেছে।
    স্থলবন্দর করতে হলে এখানে টিআর চালান নেয়ার জন্য রাষ্ট্রয়ত্ব কোন ব্যাংকের শাখা বা বুথ প্রয়োজন। কিন্তু সেখানে নেই। প্রতিদিন রপ্তানী কার্যক্রম চললেও বন্দরে কোন কর্মকর্তা না থাকায় ব্যবসায়ীদের প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে ফেনীতে গিয়ে কর্মকর্তাদের সই আনতে হয়।
    পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন জানান বর্তমানে অবকাঠামো দিক থেকে উন্নয়ন না হলেও বিলেনিয়া স্থল বন্দর শ্রীঘ্রই পূর্নাঙ্গ স্থল বন্ধরে উন্নিত হবে। মিরসরাই ইকোনমিক জোন চালু হলে উদপাদিত পন্য ত্রিপুরা রাজ্যে রপ্তানীর জন্য ভারতীয়রা বিলোনিয়া স্থল বন্দরকেই বেচে নিবে। পুলিশ ইমিগ্রেশন অফিস নির্মাণ কাজ শুরু হলেও ভারতীয় বিএসএফ বাধার কারনে নির্মান কাজ বন্ধ রয়েছে।
    ইউএনও জানান যাত্রীদের ভ্রমন সহজ করতে ইমিগ্রেশন অফিস ও শুল্ক ষ্ট্রেশানের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090