আজ

  • শনিবার
  • ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হযরত শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ চাকরি ছাড়েন ইলমে তাছাওউফ অর্জনে

  • ফেনী ট্রিবিউন ডেস্ক
  • উপমহাদেশে ইসলাম প্রচার ও জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের কাছে ইসলামের মর্যাদাকে সমুচ্চ রাখার জন্য যাঁরা অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন, কুতুবুল আকতাব, আশেকে রাসূল, মাশুকে এলাহি, হযরত শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ আশ-শহীদ র. তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ছিলেন উনবিংশ শতাব্দীর বাংলা আসামের ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ। আলোচ্য নিবন্ধে আমরা এই মহান ওলির জীবনের নানাদিক নিয়ে আলোচনা করা হলো:

    জন্ম ও পরিচয় :

    হযরত শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ আশ-শহীদ র. বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের যশোর (বর্তমানে মাগুরা) জেলার শালিখা উপজেলার অন্তর্গত হরিতলা পোস্ট অফিসের আওতাধীন গঙ্গারামপুর গ্রামের এক সম্ভান্ত্র মুসলিম ও উচ্চ জমিদার বংশে ইংরেজী ১৮৬৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম মো. মিনহাজ উদ্দিন বিশ্বাস। তিনি পেশাগত ভাবে সুদক্ষ সেটেলমেন্ট আমিন ছিলেন।

    শিক্ষা জীবন :

    ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. ছোটকাল থেকে তীক্ষ্ণ মেধার অধিকারি ও বিদ্যানুরাগী ছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষা স্বীয় পিতা-মাতার কাছ থেকেই লাভ করেন। পরবর্তীতে যশোর জেলা স্কুল থেকে ১৮ বছর বয়সে এন্ট্রান্স (বর্তমানে এস.এস.সি) কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। ইংরেজি ভাষায় তাঁর দখল ছিল যথেষ্ট। কথিত আছে, একবার বিদেশি অফিসারের সাথে অনর্গল ইংরেজী ভাষায় কথা বলে এক হাজার টাকা পুরষ্কৃত হয়েছেন।

    কর্মজীবন :

    শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. ম্যাট্রিক (এস.এস.সি) পাশ করার পর ২০ বছর বয়সে পুলিশের চাকরি গ্রহণ করেন এবং ৩ বছর পর পদোন্নতি হয়ে অফিসার পদে নিযুক্ত হন। পুলিশের চাকরি করলেও তিনি ছিলেন আল্লাহভীরু ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী। পরবর্তীতে তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করে ইলমে তাছাওউফ অর্জনে ব্রতী হন।

    কর্মজীবনের বিশেষ একটি ঘটনা ও ইলমে তাছাওউফ অর্জন :

    চাকরীরত অবস্থা জনৈক এক আল্লাহর ওলি তাঁর নিকট কিছু ময়লা কাপড় রেখে যান, তিনি কাপড় গুলোকে পরিষ্কার করে রেখে দেন। কিছুদিন পর ওই আল্লাহর ওলি আসলে, তিনি তাঁর হাতে কাপড় গুলো তুলে দেন। পরিষ্কার কাপড়গুলো দেখে আল্লাহর ওলি দোয়া করে বলেন,, “তুমি আমার ময়লা কাপড়গুলো যেভাবে পরিষ্কার করেছ, আল্লাহ তোমার দিলের ভিতর বাহির এভাবে পরিষ্কার ও নির্মল করে দিন।” আল্লাহর ওলির দোয়ার বদৌলতে ওইদিন রাতে ছদর উদ্দিন র. স্বপ্নে দেখলেন, আসমান থেকে অতি মসৃণ ও ফিনফিনে সাদা একটা কাপড় তাঁর মুখে এসে লেগেছে। এই কাপড়ের মাধ্যমে তিনি ইলমে মারেফাত হাসিল করেন। এরপর থেকেই তাঁর মনে গভীর রেখাপাত ঘটলো। কিছুদিন পর চাকরি ছেড়ে চলে যান ইলমে দ্বীন অর্জনে তৎকালীন প্রসিদ্ধ কলকাতা আলীয়া মাদরাসায়। আলিয়া মাদরাসার সম্মানিত উস্তাদগণ ছুফি ছদর উদ্দিন (র.)-এর হাল হাকিকত দেখে তাঁকে মাদরাসায় ভর্তি না করে পাঠিয়ে দেন তৎকালীন যুগের মুজাদ্দিদ, ফুরফুরা শরীফের পীর, উলিল আমর, আমিরুশ শরীয়ত, হযরত শাহ্ ছুফি আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী (র.)-এর নিকট। মুজাদ্দিদে জামান র. তাঁকে তরিকার তালিম প্রদান ও বাইয়াত গ্রহণ করালেন। সোনার শিখলে আবদ্ধ হলো এক আত্মার বন্ধন। দীর্ঘদিন কামেল মুর্শিদের দরবারে কঠোর রিয়াজত ফয়েজ ও তাওয়াজ্জুহ মাধ্যমে প্রাপ্ত হলেন চার তরিকার কামালিয়াত ও খিলাফত।

    আখলাক ও আদাত :

    শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন র. ছোটবেলা থেকেই উন্নত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তাকওয়া-পরহেযগারী, সততা, আমানতদারীতা, নম্রতা, বদান্যতা, সহানুভূতি, দানশীলতা, আতিথেয়তা, সদালাপ, কর্তব্যপরায়ণতা ইত্যাদি ছিলো তাঁর চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

    পারিবারিক জীবন :

    ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. পুলিশের চাকরীরত অবস্থায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। হুজুরের শ্যালকের বিবাহ অনুষ্ঠানে উনার স্ত্রীর পর্দার বিধান লঙ্ঘন হওয়ায় হুজুর তাকে মোহরানা পরিশোধ করে তালাক প্রদান করেন। উনাদের ঔরসে কোন সন্তান ছিলো না। পরবর্তীতে আর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি।

    লেবাছ-ছুরাত :

    শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ আশ-শহীদ র. সুন্নতে নববীর পূর্ণ অনুসরণ করতেন। তিনি সুন্নতের গুরুত্বারোপ করে বলেন, “হজরত রাছুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত তরীকা অনুসারে চলা ব্যতীত কেহ মঞ্জিলে মকসুদে পৌঁছতে পারে না।” সর্বদা তিনি মাথায় টুপি, সাদা নেছফে-ছাক গোল জামা, পায়জামা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতেন। তিনি তাঁর লিখিত “ওলি বিবির কাহিনী” কিতাবের শুরুতে অসিয়ত নামায় লিখেন, “তোমরা নামাজ, জুমার নামাজ পড়িবে, রোজা রাখিবে, যদি আল্লাহ তায়ালা মালদার করেন তবে হজ্জ করিবে, জাকাত দিবে, কোরবানি করিবে। শিরক, কুফর, বিদয়াত কার্য্য কখনো করিবে না। দাড়ি লম্বা রাখিবে৷ মোচ কাৎরাইয়া ছোট করিয়া রাখিবে।”

    “বন্দে মাতরম” বলা কুফর ফতোয়া প্রদান :

    ইংরেজী (১৯০৫-১৯১১) সালে মহাত্মা গান্ধীর স্বদেশী আন্দোলনে হিন্দুদের সঙ্গে মুসলমানরাও “বন্দে মাতরম” অর্থ্যাৎ আমি মায়ের পূজা করতেছি, আরাধনা করতেছি এই ধ্বনি উচ্চারণ করতো। ছুফি ছদর উদ্দিন র. তখন ফতোয়া দেন, মুসলমানদের জন্য বন্দে মাতরম বলা হারাম ও কুফর। তিনি আরো বলেন, আমরা মুসলমান এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো বন্দেগি করি না এবং করতে পারি না। এই ফতোয়া নিয়ে বাংলা ১৩৩০ সনে সন্দীপের মাওলানা ওজি উল্লাহ (র.)-এর সাথে বাহাস-মুনাজারা হয়। বাহাসে মাওলানা ওজি উল্লাহ র. পরাজিত হন এবং উক্ত ফতোয়া সমর্থন করেন।

    বাহাস-মুনাজারা :

    চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় শাহ্ বদিউল আলম নামে একটা বাতিল আকিদার পীর ছিলো। তারা মনে করতো, আল্লাহ তায়ালা সমস্ত বস্তুর মধ্যে আছেন। নাউজুবিল্লাহ! এছাড়া তারা পীরকে তাজিমী সেজদা, গান-বাদ্য, নারী পুরুষ এক সাথে জিকির করাকে জায়েজ মনে করতো। শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন র. ও মাওলানা ওজি উল্লাহ সন্দীপি র. বাংলা ১৩২৭ সালে তাদের সাথে বাহাস করে বাতিল আকিদা দর্প চুর্ণ করেন। এছাড়াও সন্দীপে টনা শাহ নামে এক ব্যক্তির মাজার ছিলো। সেখানে মাজারের ওপরে গম্বুজ ও নানা অনৈসলামিক কাজ হতো। ছুফি ছদর উদ্দিন র. স্হানীয় মুসলমানদের নিয়ে মাজারের গম্বুজ নিজ হাতে ভেঙ্গে সকল শরীয়তের খেলাফ কাজ বন্ধ করে দেন।

    গ্রন্থ রচনা :

    শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ মানুষদেরকে সঠিক ইসলামের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ছোট বড় মোট ১৮ টি কিতাব রচনা করেন। যার পৃষ্ঠা সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। তন্মধ্যে, এলমে তাছাওউফ (নক্সবন্দিয়া-মোজাদ্দাদিয়া তরিকা), এলমে তাছাওউফ (কাদেরিয়া তরিকা), এলমে তাছাওউফ (চিশতিয়া তরিকা), বিবি ও শওহরের কর্ত্যব (১ম ও ২য় ভাগ), সন্দীপে টনা শাহের মাজার ও মোকাদ্দামার বৃত্তান্ত, মোছলমানদিগের জন্য বন্দে মাতারম বলা হারাম ও কুফর, আমার প্রাণের রাসূল নবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আল্লাহ তায়ালার তারিফ (১ম ও ২য় ভাগ), ওলি বিবির কাহিনী, ফেনী মোনাজারা (উর্দু ও বাংলা), তানকিহাতে ছানিয়া, আকায়েদোল ইসলাম, বুজুর্গ-নামা, ফজিলতে কুরবানী, শেরেক দফের ফতোয়া।

    হজ্জব্রত পালন :

    হযরত শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. বাইয়াত গ্রহণ করে পবিত্র মক্কাতুল মোকাররমা ও মদিনাতুল মুনাওয়ারা গিয়ে দুইবার হজ্জব্রত পালন করেন।

    হেদায়েত ও তাবলীগ :

    ফুরফুরা শরীফের পীর মুজাদ্দিদ জামান (র.)-এর কাছ থেকে ছদর উদ্দিন আহমদ র. এলমে তাছাওউফ শিক্ষা গ্রহণ করে দীর্ঘ ছয় বছর বাড়িতে অবস্থান করে ইলমে দ্বীন অর্জন করে পূনরায় আপন মুর্শিদের দরবারে আসেন। ফুরফুরা শরীফে এসে খেদমতের নিয়তে লাকড়ি কাটা শুরু করলে মুজাদ্দিদ জামান র. অগ্রসর হয়ে বললেন, বাবা ছদর উদ্দিন! আল্লাহ পাক আপনাকে লাকড়ি কাটার জন্য সৃষ্টি করেন নাই, বরং আপনাকে সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের হেদায়েতের জন্য। সুবহানাল্লাহ!
    অতঃপর তিনি হজ্জ থেকে এসে হেদায়েতের দাওয়াত নিয়ে, বার্মা (মায়ানমার), রেঙ্গুন, আসাম, যশোর, পাবনা, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম প্রভৃতি অঞ্চলে ছুটে যান। বার্মাতে অবস্থানকালে অসংখ্য মানুষ তাঁর হাতে কালিমা পড়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন।

    মাদরাসা ও খানকা প্রতিষ্ঠা :

    সমাজের সর্বস্তরে ইসলামের সঠিক মর্মবাণী নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য ছুফি ছদর উদ্দিন র. অসংখ্য মাদরাসা, মসজিদ, মক্তব ও খানকা প্রতিষ্ঠা করেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ত্বহা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা (১৯২৩), পাবনা; হাদল সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা (১৯০৯), ফরিদপুর,পাবনা; ঠনঠনিয়া নূরুন আলা নূর ফাজিল মাদরাসা (১৯৪২) বগুড়া; ছদরুল উলূম সিদ্দীকিয়া (বক্তারমুন্সী ফাজিল) মাদরাসা (১৯১০), সোনাগাজী, ফেনী, কাদলা এস. এস ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসা, কচুয়া। এছাড়াও হুজুরের ইন্তেকালের পরে তাঁর স্মৃতি স্মরণে গঙ্গারামপুর ছদরিয়া দাখিল মাদরাসা (১৯৯৩), মাগুরা; গজারিয়া শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা (১৯৭৭), দাগনভূঁঞা, ফেনী সহ সারাদেশে অসংখ্য মাদরাসা, মসজিদ, হেফজখানা, এতিমখানা, খানকা ও দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে।

    সমসাময়িক পীর-মাশায়েখগণ :

    মুজাদ্দিদে জামান আবু বকর সিদ্দিকী আল-কুরাইশী র. এর প্রায় ৫৫২ জন খলিফা ছিলেন। উনারা সকলেই তাঁর সমসাময়িক ছিলেন। বিশেষত, শাহ ছুফি আব্দুল হাই সিদ্দিকী র.; শাহ্ ছুফি আবু জাফর সিদ্দিকী র.; আল্লামা নেছার উদ্দিন আহমদ র.; আল্লামা রুহুল আমিন বশিরহাটি র.; শাহ্ ছুফি আব্দুর রহমান হানাফি র.; শাহ্ ছুফি খন্দকার আব্দুল হামিদ র.; ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ র.; পীর প্রফেসর আব্দুল খালেক র. ; মাওলানা ময়েজুদ্দীন হামিদী র.; মাওলানা আজিমুদ্দীন র.; মাওলানা আব্দুল মাবুদ মেদিনীপুরী র.; ছুফি হাতেম আলি বাগদাদী র.; ছুফি আব্দুল গণী র.; শাহ্ ছুফি তোয়াজুদ্দীন র.; মাওলানা আহমদ আলী এনায়েতপুরী র.; মাওলানা ওজি উল্লাহ সন্ধিপী র.; ছুফি তোফায়েল আহমদ র.; ছুফি হাফেজ সৈয়দ বশিরুদ্দীন র.; ছুফি তাজ্জামুল হোসাইন সিদ্দীকি র. ; মাওলানা বদরুদ্দীন র. সহ প্রমুখ মহান ব্যক্তিবর্গ।

    খলিফা ও মুরীদবৃন্দ :

    হাফিজুল হাদিস আল্লামা রুহুল আমিন বশিরহাটি র.কর্তৃক লিখিত “ফুরফুরা শরীফের মুজাদ্দিদ জামান র. এর বিস্তারিত জীবনী” বইতে লেখা হয়েছে, “হযরত ছুফি ছদর উদ্দিন মস্ত ওলী, তাঁর সহস্র সহস্র মুরিদ আছে।” নিম্নে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন খলিফা ও মুরিদের নাম দেয়া হলো, কুতুবুল ইরশাদ প্রফেসর আল্লামা আব্দুল খালেক র. ও ছুফি জয়নাল আবেদীন র.। উনারা প্রথমে ছদর উদ্দিন র. এর হাতে বাইয়াত গ্রহণ ও খেলাফত লাভ করেন। পরবর্তীতে মুজাদ্দিদে জামান র. এর কাছ থেকেও খেলাফত প্রাপ্ত হোন। এছাড়া মাওলানা হাবিব উল্লাহ র.; প্রফেসর নূরুল আফসার র.; মাওলানা বজলুর রশীদ র.; মৌলভী আশেক এলাহী র.; ছুফি নূরুল হক র.; মাওলানা আব্দুল গফুর বরিশালী র.; মাওলানা বজলুল করিম র.; মাওলানা নূর বক্স র.; প্রফেসর কাজী জামালুল্লাহ র.; মাওলানা বজলুর রশীদ র.; ছুফি আব্দুল অহীদ কালিমী র.; ছুফি আব্দুল বারী র. সহ প্রমুখ মহান সাধকগণ।

    কারামত ও কাশফ :

    ১. কুতুবুল ইরশাদ, প্রফেসর আব্দুল খালেক র. শিক্ষকতার শুরুতে ফেনী কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। ফেনী শহরে তৎকালীন প্রায়ই হযরত শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ আশ-শহীদ (র.)-এর তালিমী জলসা হইত। একদিন ঘটনাক্রমে ছুফি সাহেব হুজুর র. সাথে প্রফেসর হুজুর র. এর সাক্ষাত হয়। তখন তিনি পীর মুরিদি সম্পর্কে তেমন একটা ভাল মত পোষণ করতেন না। তাই কথাচ্ছলে তিনি ছুফি ছদর উদ্দিন র. কে বলে ফেললেন, যদি আমাকে আপনি কাঁদাইতে পারেন তবে আমি আপনার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবো। জুহুরী খাঁটি স্বর্ণ চিনতে ভুল করেন না। তাই কথা দীর্ঘ না করে হযরত শাহ্‌ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. রাজি হলেন। হুজুর বললেন, “বাবা! আপনি একদিন আমার তালিমী জলসায় আসবেন, দেখা যাক, আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য কি ব্যবস্থা করেন।”

    কিছুদিন পর ফেনী শহরের এক বাড়িতে ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. এর তালিমী জলসা ছিলো, পূর্বের আলোচনা মোতাবেক প্রফেসর আব্দুল খালেক র. তালিমী জলসায় হাজির হলেন। বাদ আসর মাহফিলের কার্যক্রম কেবল শুরু, ছুফি সাহেব হুজুর র. প্রফেসর আব্দুল খালেক র. কে দেখে বাড়ির মালিককে বলেন, “প্রফেসর সাহেবকে বাহির বাড়িতে একটি চেহার দিয়ে বসার ব্যবস্থা করুন।” আর ছুফি ছদর উদ্দিন র. প্রফেসর আব্দুল খালেক র. বলেন, “বাবা! প্রফেসর সাহেব আপনি চেয়ারে বসে চক্ষু দুইটি একটু সময়ের জন্য বন্ধ করে সাওয়াব রেছানীর আমল গুলো করেন।” পাখি শিকারি যেমন বৃক্ষ শাখায় পাখিকে লক্ষ্য করিয়া গুলি নিক্ষেপে যে কাজ হয়, ঠিক তেমনি চক্ষু বন্ধের পরপর হযরত ছুফি ছদর উদ্দিন র. এর তালিম তাওয়াজ্জুহের ফলে প্রফেসর আব্দুল খালেক র. চেয়ার হইতে পড়ে দীর্ঘ তিন ঘন্টা যাবত অচেতন ও তন্ময় অবস্থা ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! মাহফিলে উপস্থিত সালেকগণেরও ঠিক এই অবস্থা হলে এদিক ওদিক ছিটকাইয়া পড়িতে থাকেন। মাহফিলে প্রফেসর আব্দুল খালেক র. নিজের এই অবস্থা উপলব্ধি করিয়া এবং মাহফিলের সালেকগণের অবস্থা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করিয়া তাওয়াজ্জুহ ও ফয়েজের বিষয়ে তথা ইলমে বাতেনের তাৎপর্যের বিষয়ে তাঁহার মনে একিন পয়দা হয় এবং উক্ত তালিমী জলসায় হযরত শাহ্‌ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. এর হাতে হাত দিয়ে বাইয়াত গ্রহণ করেন এবং তরিকতের সবক গ্রহণ পূর্বক পর্যায়ক্রমে তিনি নিজ পীরের নিকট প্রাপ্ত তালিম তাওয়াজ্জুহ এবং কঠোর রিয়াজতের বদৌলতে যথা সময়ে স্বীয় পীর থেকে খেলাফতের সনদ লাভ করেন।

    এ ঘটনা বর্ণনা করে প্রায়ই প্রফেসর আব্দুল খালেক র. বলতেন, “আমার পীর সাহেব ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. আমাকে যাহা কিছু দেওয়ার, আমাকে একবারেই দিয়ে দিয়েছেন। বারটি বছর তাহার জন্য আমার কঠোর রিয়াজত করিতে হইছে। এই সময়ে পিঠ দিয়ে কোন দিন ঘুমাই নাই।” সুবহানাল্লাহ!

    ফেনী কলেজ থেকে যখন কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে পদোন্নতি হয়ে যোগদান করতে যাবেন, তখন ছুফি ছদর উদ্দিন র. এজাজত দিয়ে বলেন, “কলকাতা থেকে সম্ভব হলে ফুরফুরা দরবার শরীফে যাতায়াত করবেন এবং তালিম তাওয়াজ্জুহ গ্রহণ করবেন।”

    উক্ত এজাজতের বদৌলতে তিনি ফুরফুরা শরীফ যাওয়া আসা করতেন। কিছুদিন যাওয়া আসার পর স্বীয় পীরের অনুমতি নিয়ে ফুরফুরা শরীফের পীর মুজাদ্দিদে জামান হযরত আবু বকর সিদ্দীকি আল কুরাইশি র. হাতেও বাইয়াত গ্রহণ পূর্বক কঠোর রিয়াজতে মোরাকাবা-মোশাহাদার মাধ্যমে ফুরফুরা হুজুর থেকেও খেলাফত প্রাপ্ত হোন।

    ২. চট্রগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের হযরত মাওলানা জামালুল্লাহ র. ছোট বেলা থেকে ৮ বছর বয়স পর্যন্ত হাটতে পারতেন না। উনাকে নিয়ে পরিবারের সবাই চিন্তিত ছিলেন। একদা ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. ওই গ্রামে সফর করেন। তখন আব্দুল বারেক মিয়াজী তাঁর পুত্র জামালুল্লাহ র. কে পীর সাহেব কেবলার নিকট নিয়ে আসেন দোয়ার জন্য৷ ছদর উদ্দিন র. জামালুল্লাকে দেখে খুব খুশি হলেন এবং বললেন, বাবা! তোমার ছেলেকে দ্বীনের পথে দিয়ে দাও। তিনি পীর সাহেবের কথায় রাজি হলেন। অতঃপর ছুফি ছদর উদ্দিন র. অসুস্থ জামালুল্লাহকে বললেন, বাবা জামালুল্লাহ! তুমি হাঁট। হেঁটে বাড়ি চলে যাও। সেখানে সবার সামনে তিনি আল্লাহর রহমতে পীর সাহেব কেবলার নেক নজরে হেঁটে বাড়ি চলে যান এবং সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান।

    ৩. শৈশব থেকেই হযরত শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ ছিলেন খোদাভীরু ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী। আউলিয়া কেরামের প্রতি ছিলো তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসা ও আকর্ষণ। পুলিশে চাকরীকালীন সময়ে একজন বিশিষ্ট আল্লাহ’র অলির কিছু কাপড় নিজহাতে ধূয়ে পরিষ্কার করে দেন। সেই বিশিষ্ট অলি এই খেদমত ও মোহাব্বত দেখে তাঁর জন্য আল্লাহতায়ালার দরবারে বিশেষ মোনাজাত করেন। তিনি বলেন “তুমি আমার ময়লা কাপড়গুলো যেভাবে ধূয়ে পরিষ্কার করে দিয়েছো, আল্লাহতায়ালা তেমনিভাবে তোমার দিলের যাবতীয় ময়লা দূর করে পরিচ্ছন্ন ও নির্মল করে দিন”।

    আল্লাহতায়ালার নেকবখত আউলিয়া কেরামের দোয়া বৃথা যায়না। সেই রাতেই ছদর উদ্দীন (রহ) স্বপ্ন দেখলেন। আসমান হতে একখানা অতিমসৃন ও ফিনফিনে কাপড় তাঁর মুখে এসে লেগেছে। যার মাধ্যমে তাঁর অভ্যন্তর বাতেনী ইলমে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। এই মোবারক স্বপ্নদর্শনের ফলে তাঁর মনে গভীর রেখাপাত ঘটলো। তিনি আল্লাহ তায়ালা জাল্লা জালালাহুর মারেফাত অর্জনের এক অপার্থিব আকর্ষণে বিভোর হলেন। পুলিশের চাকরী ত্যাগ করে দ্বীনি ইলম শিক্ষার উদ্দেশ্যে বের হলেন।

    হাফেজ ওহিদুর রহমান (র:) ছিলেন ছুফি ছদর উদ্দিন (র:) এর সুযোগ্য খলিফা। তিনি স্বীয় পীরের কয়েকটা কারামত বর্ণনা করেন। কারামত গুলো শুনে লিপিবদ্ধ করেছিলেন ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার সুবার বাজার মির্জানগর গ্রামের মরহুম কাজী বজলের রহমান। নিম্নে তা দেওয়া হলো-

    [ ১ ] ফেনী শহরের তমিজিয়া মসজিদে ছুফি ছদর উদ্দিন (র:) ও সন্দীপের মাওলানা ওজি উল্লাহ (র:) এর সাথে একটি মাসয়ালা নিয়ে মতানৈক্য হয়। ছুফি সাহেব হুজুর বলেন,এটা জায়েজ নাই। মাওলানা সাহেব বলেন জায়েজ। তখন মাওলানা সাহেব ফতওয়া লেখা আরম্ভ করলো। ছুফি সাহেব হুজুর মসজিদের এক পার্শ্বে বসা ছিলেন। তিনি বলেন, মাওলানা সাহেব আপনি ভুল ফতওয়া লিখতেছেন। আমাকে এখনই নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এটা জায়েজ নাই। আপনি অমুক কিতাবের এত পৃষ্টায় দেখেন। তখন মাওলানা সাহেব ওই কিতাব দেখে বুঝলেন উনার মাসয়ালা ভুল ছিলো।

    [২ ] ছুফি ছদর উদ্দিন (র:) কে এক গরীর মুরিদ দাওয়াত করিয়া বাড়িতে আনলেন। দাওয়াত খাওয়ার পর বিদায় নিয়ে হুজুর কিছুদূর গেলেন। তখন ঐ গরীব মুরিদের অন্তরে জ্বালাপোড়া শুরু হইল, হায়! আমি হুজুরকে উপযুক্ত খেদমত করতে পারি নি। তখন ছুফি সাহেব হুজুর দাড়াইয়া মুরিদকে কাছে ডেকে আনলেন এবং বললেন, বাবা আপনি কোন চিন্তা করবেন না। ছুফি সাহেব টাকা চায় না, মন চায়। আপনার মন পাওয়া গেল। তখন গরীব মুরিদ খুশি হয়ে গেল।

    [৩ ] ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার ধনিকুন্ডা চিথলিয়া গ্রামে ১৯৪৩ ইং সালে জাপান বিট্রিশের যুদ্ধের সময় এয়ারপ্লেনের ঘাঁটির প্রোগ্রাম হয়েছিলো। তখন গ্রামবাসী ছুফি সাহেব হুজুরকে দাওয়াত দিয়ে দোয়ার আয়োজন করিয়েছিলেন। ততক্ষণাৎ ধনিকুন্ডা চিথলিয়া গ্রাম থেকে ঘাঁটি উঠিয়া পূর্ব দিকে সলিয়া গ্রামে ঘাঁটির প্রোগ্রাম হয়। তখন আবার সলিয়া বাসি ছুফি সাহেব হুজুর (র:) কে দোয়ার জন্য আনার চেষ্টা করে। হুজুর তখন বলেছিলেন, আমি ঘাঁটির বৈদ্য নাকি? পূনরায় হুজুর আর আসেন নি।

    [৪ ] একদা ছুফি সাহেব হুজুর (র:) কে এক মুরিদ দাওয়াত করলো। হুজুরের মেহমানদারির জন্য মুরিদ অংশীদার পুকুর থেকে মাছ উঠালো। খাবার পরিবেশনের সময় মুরিদ জানতে চাইলো হুজুর! তাকওয়া কি? তখন ছুফি সাহেব হুজুর (র:) উত্তর দিয়েছিলেন, তাকওয়া অর্থ হলো আপনার পুকুরের মাছের সাথে আমার হাত না লাগানো। সুবহানাল্লাহ!

    [৫] তিনি আমাদের ফটিকছড়িতে তরিকতের কাজে হেঁয়াকো হয়ে আসা যাওয়া করতেন। একবার ফটিকছড়ি থেকে পায়দলে হেঁটে চলে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে এক মহিলাকে দেখলেন। একটু তাকিয়ে তিনি চলতে পথ চলতে লাগলেন এবং বলে উঠলেন তোমার পিছনে আজরাঈল আলাইহিস সালাম দাঁড়িয়ে আছে। আর তুমি শিম (ছৈ) খুঁজতেছ। সাথে অনেক মুরিদ ছিলেন। কিন্তু হুজুর কেন এরুপ বললেন কেউ বুঝতে পারেনি। একটু সামনে যেতেই শুনা গেল ঐ বাড়ি থেকে কান্নাকাটির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। খবর নিয়ে দেখা গেছে, যে মহিলা শিম খুঁজতে ছিল ঐ মহিলা ইন্তেকাল করেছেন।

    শাহাদাত বরণ :

    হযরত শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ (র.)-এর কাছে আল্লাহ পক্ষ থেকে ইলহাম হতো, যে কোন কাজের। ঠিক তেমনই ১৯৪৪ সালে রেঙ্গুন থাকাকালীন আল্লাহর পক্ষ থেকে ইলহাম হলো, জাপান কর্তৃক রেঙ্গুনে বোমা পড়বে। জাপান ও বৃটিশ এই যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাবে। ইলহামে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে তিনি তাঁর কাফেলাকে নিয়ে চট্টগ্রাম হয়ে ফেনীতে চলে আসেন। তিনি আসার কিছুদিন পর রেঙ্গুনে বোমা পড়েছে। এই ঘটনায় অসংখ্য লোক হতাহত হয়েছেন।

    ইন্তেকালের ১ বছর আগে পূণরায় ইলহাম হলো, এক জায়গায় সবরের সাথে ছয়মাস অবস্থান করতে হবে। ইন্তেকালের পূর্বে পায়খানা-প্রসাব বন্ধ হয়ে যাবে। চৈত্র মাসের ২৬ তারিখে ইন্তেকাল করবেন। ইন্তেকাল কোথায় কিভাবে হবে, দাফন কোথায় হবে। সুবহানাল্লাহ!

    তিনি সর্বদা মনের ভিতরে লালন করতেন শাহাদাতের অমীয় সুধা পানের। আল্লাহ তায়ালা মকবুল বান্দার সেই ইচ্ছেটুকুও পূরণ করেছেন। রেঙ্গুন থেকে ফিরে ফেনীতে অবস্থানকালীন সময়ে জাপানী বিমান থেকে নিক্ষেপিত বোমার একটা ছোট অংশ তাঁর ডান পায়ের নিচে লেখে আঘাতপ্রাপ্ত হন। আঘাতের বিষক্রিয়া সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়লে বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। একদিন আসরের নামাজের আগে স্থানীয় কবিরাজ মুরিদকে বললেন, বাবা! বোমার এই অংশটা নিয়ে কবরে যাওয়া ঠিক হবে না। আমি যখন নামাজে দাঁড়াবো, তখন আপনি আমার পায়ে বোমার যে অংশটা প্রবেশ করছে তা বের করে নিবেন। পীরের হুকুম পেয়ে মুরিদ কাজটা যথাযথ পালন করলেন।

    অতঃপর শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দিন আহমদ র. ইংরেজি ১৯৪৪ সালের ৯ এপ্রিল , বাংলা ১৩৫০ সালের ২৬ শে চৈত্র, হিজরি ১৩৬৩ সালের ১৫ রবিউস সানি, রোজ জুমাবার হাজার হাজার ভক্ত মুরিদ-মু’তাকিদিন, আত্মীয় স্বজন ও মুসলমান জাতিকে শোক সাগরে ভাসিয়ে ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার গজারিয়া গ্রামে মাওলানা হাবিব উল্লাহ (র.)-এর বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। ইন্তেকালের সময় তাঁর বয়স ছিলো প্রায় ৮০ বছর।

    মাজার শরীফের অবস্থান :

    বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের অর্ন্তগত ফেনী জেলার দাগনভূঁঞা উপজেলার নিভৃত গজারিয়া গ্রামে মাওলানা হাবিব উল্লাহ (র.)-এর বাড়ির সম্মুখে মাজার শরীফের অবস্থান। এখানে তাঁর স্মৃতি বিজড়িত নামানুসারে কমপ্লেক্সের অধীনে মাদরাসা, মসজিদ, এতিমখানা ও হেফজখানা পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রত্যহ দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য লোক তাঁর রুহানি দোয়া ও ফয়েজ তাওয়াজ্জুহ হাসিলের জন্য এই মহান ওলির জিয়ারতে আসে। আল্লাহর রহমতে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মাজার শরীফটি সকল প্রকার বিদয়াত ও শরিয়ত নিষিদ্ধ কাজ থেকে মুক্ত। আলহামদুলিল্লাহ!

    প্রতি বছর ২৬ শে চৈত্র, ৯ এপ্রিল তাঁর ইন্তেকাল বার্ষিকী উপলক্ষে ঈসালে সাওয়াব ও মাজার শরীফ কমপ্লেক্সের উদ্যোগে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ শুক্র ও শনিবার দুইদিন ব্যাপি বার্ষিক মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

    তথ্যসূত্র :

    ১. তাযকেরাতুল আওলিয়া, মাওলানা নূরুর রহমান, এমদাদিয়া প্রেস, ঢাকা, (১ম মুদ্রণ, ১৯৮২ ইং.), পৃ. ২৩৮ -২৪১।

    ২. বাংলাদেশের পীর আওলিয়াগন, মাওলানা এম.এ ওবাইদুল হক, মদিনা পাবলিকেশান্স, ঢাকা, (বর্ধিত সংস্করণ, ২০০৮ ইং.), পৃ. ৩৯৮-৪০১।

    ৩. শাহ্ ছুফি ছদর উদ্দীন আহমদ র. জীবন ও অবদান, মুহাম্মদ ফয়জুল ইসলাম, এম. ফিল ডিগ্রি লাভের জন্য উপস্থাপিত অভিসন্দর্ভ (অপ্রকাশিত), ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া, জুন, ২০১৪ ইং।

    ৪. কুতুবুল ইরশাদ, প্রফেসর মাওলানা আব্দুল খালেক র. এর জীবন চরিত্র, অধ্যাপক সিদ্দিক আহমদ খান, প্রকাশক, ছুফি খোন্দকার আবদুল জব্বার, নতুন পল্টন, আজিমপুর, ঢাকা, (১ম প্রকাশ,২০০১ ইং)।

    ৫. ফুরফুরা শরীফের পীর হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী র. এর বিস্তারিত জীবনী, হাফেজুল হাদিস আল্লামা রহুল আমিন বশিরহাটি র., মাকতাবাতুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াত, ঢাকা (পুনঃমুদ্রণ, ২০১৫ ইং)।

    ৬. বাংলাদেশের পীর আওলীয়া ও সাধক ওলামা মাশায়েখদের জীবনী, এ.এস.এম আজিজুল হক আনসারী, সোলেমানিয়া বুক হাউস, ঢাকা, (৫ম মুদ্রণ, ২০১৫ ইং), পৃ.১৮৭-১৯০।


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090