আজ

  • শনিবার
  • ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেনীর ভোট কেন্দ্রগুলো ফাঁকা

  • নিজস্ব প্রতিনিধি
  • পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফেনীর চারটি উপজেলায় রবিবার চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ফেনী সদরে চলছে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ফেনী পৌরসভাসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ১১৭টি কেন্দ্রে ভোটের আয়োজন হলেও ভোটারদের দেখা মিলছে না। বেলা ৪টা পর্যন্ত ফেনী শহরে ও তার আশপাশের বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া কেউ নেই। এমনকি নৌকা ছাড়া অন্য প্রার্থীদের এজেন্টও খুঁজে পাওয়া যায়নি এসব ভোটকেন্দ্রে। এসব ফাঁকা কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিতরা খোশগল্প করে সময় কাটাচ্ছেন।

    ফেনী শহরের আলীয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, এই কেন্দ্রের মাঠ পুরোটাই ফাঁকা। দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কেন্দ্রে ভোটার না থাকায় অলস সময় পার করেন। কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশের পর দেখা গেল মাদ্রাসায় বিভিন্ন কক্ষে সাতটি বুথ। শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটারের ভোটকেন্দ্র এটি। এখানকার মোট ভোটার দুই হাজার ৭১০ জন। তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় এই কেন্দ্রে ভোট পড়ে মাত্র ৬১টি।

    এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, আমার কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতি কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার সংখ্যা বাড়তেও পারে।

    ফেনী সরকারী বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৩০টি। কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতিও কম। ওই কেন্দ্রে তিন নম্বর বুথের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হারাধন বর্মন জানান, সকাল থেকে এই পর্যন্ত কেবল একজন ভোটার ভোট দিয়েছেন।

    এই স্কুলে আরেকটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা দিদোয়ানুল কবির জানান, তার কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২৩১৫ জন। সবাই পুরুষ ভোটার। বেলা সোয়া এগারটা পর্যন্ত তার কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৭০টি।

    ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আনোয়ারুল বলেন, কেন্দ্রে ভোটার নাই, বসে থেকে কাজ নাই। ভোটার না থাকায় অলস সময় পার করছি আমরা।

    একই অবস্থা ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বারাহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর খানবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শর্শদী উচ্চ বিদ্যালয় ও মেজর সালাহ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। দাগনভূঞার পশ্চিম রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলাইয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলগাজী উপজেলার আলি আজ্জম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র ও সোনাগাজীর সেকান্তর মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়েও ভোটার শূন্য কেন্দ্র দেখা যায়।

    কেন্দ্রগুলো পরিদর্শনকালে ভোটাররা জানান, ভোট কেন্দ্রে না যেতে তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন সরকারদলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা। অনেক ভোটার কেন্দ্রের আশপাশের ঘোরাঘুরি করলেও তাদের ভোটকেন্দ্রের দিকে ঘেঁষতে দিচ্ছেন না তারা। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

    ফেনী সদর উপজেলার মঠবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘক্ষণ ঘোরাঘুরি করেও ভোট দিতে পারেননি ৭০ বছরের ওবায়দুল হক। তাকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতেই দেয়নি বলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে তাদের সহায়তায় ভোট দিতে সক্ষম হন তিনি।

    এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে মাঠে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিন স্তরের নিরাপত্তায় পুলিশ-আনসার সদস্যদের পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি ও গ্রাম পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। মাঠে রয়েছে নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।

    জেলা পুলিশ জানায়, জেলার চারটি উপজেলার ২৯২টি কেন্দ্রে ৫ হাজারের অধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

    মেজর সালাহ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার শরিফুল ইসলাম জানান, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে ভোটারদের উপস্থিতি কিছুটা কম স্বীকার করে তিনি বলেন, বেলা ১১টা পর্যন্ত তার কেন্দ্রে ১১৮টি ভোট কাস্ট হয়েছে।

    সম্পাদনা : এএএম/এটি


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090