শীতকালীন/মৌসুমি সবজি স্কোয়াস আবাদ করে এলাকায় তাক লাগিয়েছেন ফেনীর দাগনভূঞার কৃষক আব্দুল্লাহ আল আমিন বাবলু। হয়েছে বাম্পার ফলনও। তাকে অনুসরণ করছে দাগনভূঞার প্রান্তিক চাষিরা। স্কোয়াসের দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো।
স্কোয়াস চাষের উপযুক্ত পরিবেশ ও মাটি উপযোগী জমি রয়েছে দাগনভূঞায়। লাভের আশায় ভিনদেশি এ ফসল দেশের মাটিতে চাষ করে সফলতা দেখিয়েছেন বাবলু।
কৃষক আব্দুল্লাহ আল আমিন বাবলু জানান, স্কোয়াস আবাদের সুবিধা হচ্ছে অল্প সময়ের ফসল প্রাপ্তি এবং সাশ্রয়ী উৎপাদন খরচ। তাছাড়া এক বিঘা জমিতে যে পরিমাণ কুমড়া লাগানো যায় তার চেয়ে দ্বিগুণ স্কোয়াস লাগানো সম্ভব। পূর্ণ বয়স্ক একটি স্কোয়াস গাছ অল্প জায়গা দখল করে। স্কোয়াস ফুল থেকে শুরু হয়। একেকটি গোড়ায় ৮-১২টি পর্যন্ত স্কোয়াস বের হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয় এটি। ডগার প্রতিটি পাতার গোড়া দিয়ে স্কোয়াস বের হয়।
দেশের উচ্চ ফলনশীল ফসলের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি উৎপাদন করে রীতিমত হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছেন দাগনভূঁঞা উপজেলার জাঙ্গালীয়া গ্রামের এ কৃষক।
বাবুলের মতে, দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করে দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন অনেক বেকার যুবক। এসব বেকার যুবক বিদেশে গিয়ে যে অর্থ উপার্জন করে, তার চেয়ে অধিক অর্থ উপার্জন করা যাবে উচ্চ ফলনশীল এই ফসল আবাদ করে। তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলবো, বিদেশ না গিয়ে স্কোয়াস চাষ করুন।
বাজারে প্রতি কেজি স্কোয়াস বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। স্কোয়াস দেখতে অনেকটাই শশার মতো। রং কালো। উচ্চ ফলনশীল এ জাতের ফসল ভাজি, মাছ ও মাংসে রান্না উভয়ভাবেই খাওয়ার উপযোগী এবং সুস্বাদু। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইন্টারনেট দেখে চট্টগ্রাম থেকে স্কোয়াস সবজির বীজ সংগ্রহ করে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মারুফের পরার্মশে ১৫ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে রোপণ করেন বাবুল।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, কৃষক বাবুলের স্কোয়াস চাষে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি। তার দেখে অন্যরাও এটি চাষে উৎসাহী হচ্ছেন।
দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম বলেন, স্কোয়াস সবজিটি মূলত ভারতের। পুষ্টিকর, সু-স্বাদু, উচ্চ ফলনশীল, লাভজনক নতুন জাতের সবজি। এটি লাউ গোত্রের সবজি। অন্য ফসলের চেয়ে স্কোয়াস চাষে খরচ অনেক কম লাগে। এটি ফুলের টবেও চাষ করা যায়।
তিনি আরো বলেন, স্কোয়াসের বীজ বপনের মাত্র ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে ফুল ধরে, ফল আসে। সাত থেকে আট সপ্তাহ পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়। এটি মাছ, মাংসের সঙ্গে রান্না করে এবং সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। একটু পরিচর্যা করলে অনেক ভালো ফলন পাওয়া যায়।
ফেনী ট্রিবিউন/আরএম/এএএম