আজ

  • বুধবার
  • ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  • ১২ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সালতামামি ২০১৯ : দেশের ক্রিকেটে আলোচিত ৫

  • ফেনী ট্রিবিউন ডেস্ক
  • দেখতে দেখতে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে বিদায় নিচ্ছে আরো একটি বছর। মাত্র ছয়দিন পরই উদিত হবে নতুন বছরের সূর্য। বিদায় নেবে ২০১৯ সাল। বিদায়ী বছরটি নিয়ে সময় এসেছে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেব নিকেশের।

    গত এক বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে ঘটেছে নানা ঘটনা। তার মধ্যে আছে অর্জন আর হতাশার মিশ্রণ। বিদায়ী বছরটিতে দেশের ক্রিকেট নিয়ে আজকের সালতামামি:

    ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসী হামলা

    বছরের শুরুতেই বড় একটি ঝড় বয়ে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উপর দিয়ে। বিপিএল ষষ্ঠ আসর শেষে ফেব্রুয়ারি-মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে যায় টাইগাররা। ১৫ মার্চ, শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের একটি মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। এতে ৪৯ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৪৮ জন।

    ঘটনাস্থলের মাত্র ৫০ গজের মধ্যেই ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের একটি দল। তারা সে স্থান থেকে নিরাপদে হোটেলে পৌঁছালেও তাদের ভীতি থেকে যায়। ঘটনার পর থেকে প্রচণ্ড ট্রমার মধ্যে সময় কাটতে থাকে তাদের। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে শনিবারের ম্যাচ বাতিল করা হয়। বাংলাদেশ দলকে যত দ্রুতসম্ভব দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং পরেরদিন রাতেই দেশে পৌঁছায় টাইগাররা।

    প্রথম ত্রিদেশীয় সিরিজ শিরোপা

    নিউজিল্যান্ড সফর শেষে শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি। মে মাসে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যায় টাইগাররা। স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশকে নিয়ে আয়োজিত হয় বহুজাতিক টুর্নামেন্ট। প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো বহুজাতিক সিরিজে শিরোপা ঘরে তোলে মাশরাফীর বাংলাদেশ। এর আগে মোট ছয়বার বিভিন্ন ত্রিদেশীয় বা বহুজাতিক সিরিজ বা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু শিরোপা ছিলো অধরা।

    ক্রিকেটারদের ১৩ দফা ও ধর্মঘট

    অক্টোবরের শেষ দিকে হঠাৎ করেই ঝ্ঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে দেশের ক্রিকেট। ২১ অক্টোবর দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ধর্মঘটের ডাক দেয় ক্রিকেটাররা। ১৩ দফা দাবিতে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিরত থাকে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ঘরোয়া ক্রিকেটাররা। অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। ২৩ অক্টোবর ক্রিকেটারদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিসিবি। সেখানে ক্রিকেটারদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে সাকিব-তামিমরা।

    সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা

    ক্রিকেটারদের ধর্মঘট শেষের সপ্তাহ পূরণের আগেই অনাকাঙ্ক্ষিত এক খবর স্তব্ধ করে দেয় দেশের ক্রিকেট। ভারতীয় জুয়াড়ি দীপক আগারওয়ালের কাছ থেকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করার দায়ে এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য সাকিবকে নিষিদ্ধ করে আইসিসি।

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি জানায়, ২০১৮ সালে চার মাসের মধ্যে তিনবার জুয়াড়ির কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পান সাকিব। কিন্তু কোনোবারই তা জানাননি আইসিসিকে। সে অভিযোগ স্বীকার করে নেন সাকিব। একইসঙ্গে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার অঙ্গীকার করা সাকিবকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। এর মধ্যে এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর মাঠে ফিরতে পারবেন সাকিব।

    ঐতিহাসিক গোলাপি বলের টেস্টে যাত্রা

    ২২ নভেম্বর কলকাতার ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো দিবারাত্রির টেস্ট খেলতে নামে বাংলাদেশ। এই টেস্ট দিয়েই গোলাপি বলের টেস্টে যাত্রা শুরু হয় ভারতের। নানান আয়োজনে টেস্টের উদ্বোধন করা হয়। সেদিন স্টেডিয়ামে সংবর্ধনা দেয়া হয় বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের সব সদস্যকে। থাকেন ভারতের ক্রিকেটাররাও।

    মাঠে ঘণ্টা বাজিয়ে টেস্টের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও।

    নিষেধাজ্ঞার খড়্গে থাকা সাকিব আল হাসান ছিলেন না ঐতিহাসিক এ টেস্টে। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে সফর থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তামিম ইকবালও। মুমিনুল হকের নেতৃত্বে খেলা বাংলাদেশ সেই ঐতিহাসিক টেস্টের স্মৃতি ভুলে যেতেই চাইবেন। ভারতের সামনে মাত্র দুই দিন আর ৪৭ মিনিট টিকতে পেরেছিলেণা টাইগাররা। ম্যাচটি ইনিংস ও ৪৬ রানের ব্যবধানে জিতে নেয় স্বাগতিকরা।

    ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এম/আরএস


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090