সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুরে উঠছে কালো পতাকা। খাল পাড়ের রিক্সা চালক জসিমের বাড়ীমুখি মানুষের দীর্ঘ লাইন। এ বাড়ীতে এর আগে এত মানুষের উপস্থিতি দেখেনি কেউই। দলে দলে মানুষ আসছে। নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ এমনি শিশু। সবার চোখে-মুখে শোকের ছায়া। স্বজন হারানোর শোক।
শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটা। খালপাড়ের খোলা জমিতে একে একে রাখা হলো পাঁচটি লাশ। জানাযা শেষে একটু পরেই রাখা হবে কবরে। জসিমের অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে (জসিমকে) পাওয়া গেল না। পাশের একটি জমিতে আদমরা হয়ে শুয়ে আছে সে। তাকে ঘিরে কয়েকটা মানুষ জড়ো হয়েছে। কেউ কেউ সান্তনা দিচ্ছে। কিন্তু জসিমও যেন লাশ হয়ে পড়েছে।
কেউ কেউ বলছেন এ গ্রামে আর কেউ এক সাথে পাঁচটা কবর দেখেনি। যারা কবর খুঁড়ছেন তারাও কি কখনো একসাথে এত কবর খুঁড়েছেন? দূর থেকে নারী কণ্ঠের বিলাপ (কান্না) শোনা যাচ্ছে। পুরুষদের চোখেও কান্নার ছাপ।
একটা সময় কান্না শেষ হতে থাকে। পাঁচ-পাঁচটা তাজা কবরে পানি ছিটিয়ে মৌলভীর (মাওলানার) সাথে মুনাজাত ধরে জসিম। সাথে কয়েক হাজার মানুষ। দোয়া হয় তাদের জান্নাতবাসী হওয়ার জন্য।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকালে দাওয়াত খেয়ে বাড়ী ফেরার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাঙ্গারতাকিয়া নামকস্থানে দূর্ঘটনায় প্রাণ হারায় চালকসহ একই পরিবারের ৫জন। নিহতরা নবাবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুরে গ্রামের রিক্সাচালক জসিম উদ্দিনের স্ত্রী নাসিমা (৪৫), শাহাদাত (২৬), নাসির (২৫), সালমা (১৮) ও দেলোয়ার হোসেন (১৭)। অপরদিকে আরেক নিহত সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালক রুহুল আমিন (৫২) ফেনী পৌরসভার মধুপুরের বাসিন্দা।
সম্পাদনা: এএএম/ আরএইচ/এনকে