ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর খোয়াজ গ্রামের সফিউল্লাহর স্ত্রী নুরের নাহারকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা মামলায় দেবর কামাল উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ ১৬ বছর পর বুধবার (২৪ নভেম্বর) ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফের আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ে মামলার অপর আসামি সাহাব উদ্দিন ও সাইফুলকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও বাকি দুই নারী আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি সাহাব উদ্দিন ছাড়া বাকিরা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পৈত্রিক সম্পত্তি বন্টন নিয়ে সোনাগাজীর চরছান্দিয়া এলাকার মুন্সিমিয়ার সন্তানদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জেরে ২০০৫ সালের ২২ ডিসেম্বর রাতে বাড়ির উঠানে কুপিয়ে ও পিটিয়ে সফিউল্লাহর স্ত্রীকে মারাত্মক আহত করা হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসপাতাল ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া জয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ ডিসেম্বর নুরের নাহার মারা যান।
এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী সফিউল্লাহ বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় তার ভাই কামাল উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, ভাতিজা সাইফুল ইসলাম, ভাবি ফাতেমা আক্তার ও ভাতিজি লাভলী আক্তারকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত আলী ২০০৬ সালের ২৬ মে আদালত অভিযোগপত্র জমা দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজেন্দ্র কুমার ভৌমিক জানান, এ মামলায় জামিনের পর থেকে সাহাব উদ্দিন পলাতক। রায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড; সাহাব উদ্দিনকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড; সাইফুল ইসলামকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি দুই নারী আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
ফেনী জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি হাফেজ আহাম্মদ জানান, দীর্ঘ ১৬ বছর পর সোনাগাজীর নুরের নাহার হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে একজন পলাতক ছিলেন। বাকি দুজনকে কাঠগড়া থেকে আটক করা হয়েছে।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি