ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম ভূইয়া টিপুর বিরুদ্ধে নারীকে বিয়ের প্রলোভনে শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগে ফেনী মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেছেন ভিকটিম রেহানা আক্তার সুমী (৩৫)। গত ১৮ জুলাই সুমি বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত অভিযোগে দিদারুল আলম টিপু (৪০), তার স্ত্রী লাভলী, মো. হানিফ বাবুল, সবুজ প্রকাশ লাল সবুজ, সেলিম, মো. সমির ও মাসুদ রানাসহ মোট সাত জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে সুমী উল্লেখ করেন, গত ৩ জুন দিদারুল আলম টিপু তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পৌরসভার পূর্ব উকিল পাড়া পেট্টোল বাংলা কবির আহাম্মদের ভাড়া বাসায় নিয়ে এসে দীর্ঘ দুই মাস যাবত তালাবদ্ধ করে আটকে রাখে। পরবর্তীতে তাকে ফেনী শহরের পুরাতন পুলিশ কোয়ার্টার টিপুর গাড়ীর চালক ইমনদের বাসায় নিয়ে গিয়ে ৬ মাস রাখে।
এসময় তাকে বিয়ের কথা বললে গত ১ মার্চ পেট্টো বাংলার বৃত্তিকা ভবনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে নিয়ে ভাড়া বাসায় উঠে। সেখানে চার মাস তার সাথে নিয়মিত দৈহিক মিলন তথা শারীরিক সম্পর্ক করে। এর ফলে সে গর্ভধারন করলে টিপু তাকে ম্যাস্ক হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়। পরীক্ষার রিপোর্টে গর্ভধারনের বিষয়টি নিশ্চিত হলে ১৪ মার্চ জোর পূর্বক ঔষধ খাইয়ে তার গর্ভের সন্তান হত্যা করে। এরপর পুনরায় গর্ভধারন করলে তার অনিচ্ছায় জোরপুর্বক গত ৯ জুলাই টিপু হাসপাতালে নিয়ে গর্ভের দ্বিতীয় সন্তানটিও হত্যা করে।
এরপর পুনরায় তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ১১ জুলাই দিদারুল আলম টিপু, তার স্ত্রী লাভলী, মো. হানিফ বাবুল, সবুজ প্রকাশ লাল সবুজ, সেলিম, মো. সমির ও মাসুদ রানা টিপুর পরিবারের সহযোগিতায় তাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে সে অসুস্থ অবস্থায় খালাতো বোনের বাসায় আশ্রয় নিয়েছে। গত ১৫ জুলাই ওই বাসার তৃতীয় তলার এক ভাড়াটিয়ার ফোন কলের মাধ্যমে জানতে পারেন টিপু তার সহযোগিদের সহযোগিতায় ঘরের সকল আসবাবপত্র নিয়ে যায়।
বর্তমানে টিপুকে বিয়ের বিষয়ে কথা বললে সে তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এর আগে টিপু ও তার সহযোগিরা তাকে বিভিন্নভাবে প্রলুব্দ করে ঘোপাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল হক মানিকের বিরুদ্ধে জোর পূর্বক সাংবাদিক সম্মেলন ও ফেনীর আদালতে নারী নির্যাতনের অভিযোগে একটি সিআর মামলা (মামলা নং-১৯২/২০২০) করায়। এ ঘটনায় সুমী চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযোগকারী রেহানা আক্তার সুমীকে মারধরের ভিডিও চিত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, টিপু আমাকে মারধর করার সময় যে ভিডিও করেছে, তাও সত্য।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে ছাগলনাইয়া উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম ভূইয়া টিপুর মুঠোফোনে কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন অভিযোগ প্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করেন।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি