আজ

  • শনিবার
  • ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেনী-৩ আসনে নৌকার মাঝি হতে চান মাটি ও মানুষের নেতা হিসেবে খ্যাত দিদারুল কবির রতন

  • আবদুল্লাহ আল-মামুন
  • ফেনী-৩ (দাগনভূঞা-সোনাগাজী)  আসনে সরকারী দলের সম্ভাব্য প্রার্থী দিদারুল কবির রতন বলেছেন, দাগনভূঞা-সোনাগাজীতে গত প্রায় দশ বছরে বর্তমান সরকারের আমলে যে উন্নযন হয়েছে তা স্বাধীনতার পর কেউ করেনি। বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগ , স্কুল , মাদ্রাসা, আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে সব শ্রেণীর মানুষ শান্তিতে আছে। যে কারনে জনগণ অাগামী নির্বাচনে নৌকাকে বেছে নেবে, অার জনগণই চায় আমি সেবার হাত বাড়িয়ে দেই।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি তার নিজ এলাকা প্রতিটি গ্রামে গিয়ে গণসংযোগ করছেন, মানুষের জন্য কাজ করছেন। তিনি এলাকার জনগনকে বুঝাতে সক্ষম হযেছেন যে নৌকাই হচ্ছে দেশের ও জনগনের উন্নয়নের প্রতীক।

    ফেনী জেলা যুবলীগ সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান আগামী নির্বাচনে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য জনগনের প্রতি আহবান জানান।

    দাগনভূঞা উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং সোনাগাজী উপজেলার ৯ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। দাগনভূঞা উপজেলার ২০০৯ -২০১৮ সালে ১৬৫ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক রক্ষনাবেক্ষণ ও ২৬.২৫ কিঃমি সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে।

    একই সাথে ৩৮.৯১ কিঃমি এ মাসে উন্নয়ন কাজ শেষ হবে। ’২০০৯-২০১৮ সালে ১৭৫ .৩০ কিমি সেতু/ কালর্ভাট নির্মাণ করার ফলে জনগণের যাতায়াত সমস্যা সমাধান হুয়েছে বলে তিনি জানান।

    তিনি বলেন, ৬৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬ টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, মুক্তিযোদ্বা কমপ্লেক্স নির্মাণ, একই সাথে অসচছল মুক্তিযোক্তাদের ৫টি  ঘর নির্মাণ করা হয়।

    তিনি আরো বলেন, ৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেরামত করা হয়েছে। এলাকার অসহায় মানুষের সেবা করার ফলে মানুষ চায় আমি উন্নয়ন প্রতীক নৌকা মার্কা এমপি ইলেকশান করে উন্নয়নে অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। যুব সমাজকে সংগঠিত করায় দলের মধ্যে শৃঙ্খলা এসেছে বলে দাবি করেন তিনি। আমি কাজ হলো দলের জন্য কাজ করা,  দলের ক্ষতি হোক , নেতাকর্মী বিভাজন হোক সে সমালোচনা করা না। এখন মানুষ বিচার করবে কারা অতিথি পাখি আর কারা মৌসুমি পাখি আর কারা তৃনমূলে থাকে।

    এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কয়েকজন নেতাকর্মি নিয়ে লিফলেট বিতরণ করে প্রচারনা চালালে এমপি হওয়া যায়?

    তিনি বলেন, দলের নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করা হয়েছে যাতে আমরা এ আসনে জয়লাভ করতে পারি। বিগত ১০ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ করে আসছি , আগামীতে করবো, দল যাকে মনোয়ন দেয় আমরা তার পক্ষে কাজ করবো।

    তিনি বলেন বিএনপি-জামাত আমলে জেলে খেটেছি, তৃণমূল থেকে দলের জন্য কাজ করছি , ত্যাগ স্বীকার করার ফলে জনগণ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে , কাজেই সাধারণ মানষের রায়ই আমার ভরসা। গত বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) এক সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী  মাটি ও মানুষের নেতা হিসেবে খ্যাত দিদারুল কবির রতন এসব কথা বলেন।

    এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলের মধ্যে কোন কোন্দল নেই , আমাদের নেতাকর্মী সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরছে।

    তিনি বলেন, আমি কাজ করছি নেত্রীর আদেশে, আমি নিজে কোথাও বলিনি আমি প্রার্থী হব, জনগণই বলবে তারা কি চায়, কাকে চায়। তারা বিগত দিনে কাকে কাছে পেয়েছে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় গ্রামে গ্রামে আজ বিদ্যুতের আলো জ্বলে। প্রায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে এ দুই উপজেলায়।

    আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ আসন বিএনপির দুর্গ ছিল, কিন্তু আজ আমরা জনগণের সেবা করে, পাশে দাঁড়িয়ে সমস্যা সমাধান করেছি, কাজেই এখন বলা যায় আওয়ামী লীগ এখানে শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

    তিনি বলেন, দল যাকে মনোয়ন দিবে তাকে মানুষের পাশে থাকতে হবেই, কাজ করতে হবে বিনা স্বার্থে। তা না হলে এ আসন আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দলের শীর্ষ নেতারা যদি মাঠ পর্যায় নিরপেক্ষ টিম পাঠান তখন উনারা বুঝতে পারবেন কারা আজ দলের জন্য মানুষকে সংগঠিত করেছে।

    এদিকে এ প্রতিনিধি গত কয়েকদিনে ভোটার ও দলের নেতা সাথে কথা বলেন। তারা জানান, দিদারুল কবির একজন শিক্ষিত ও সজ্জন ব্যক্তি। তিনি কয়েক শতাধিক কালভার্ট ও ব্রিজ, বিদ্যুতায়ন তিনি সহাযতায় করেছেন।

    উল্লেখ্য, ফেনী জেলা যুবলীগ সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন। কিশোর বয়স থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেই আপন বড় ভাই তৎকালীন থানা শ্রমিক লীগ সভাপতি আজিজুল কবির মিলনকে বুলেটের আঘাতে প্রাণ দিতে হয়েছে। তবুও এক কদম পিছিয়ে পড়েননি তার আদর্শ থেকে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, দিদারুল কবির রতন দলের একজন নিবেদিত কর্মী, একটি প্রতিষ্ঠান, সর্বোপরি মুজিব আদর্শের লড়াকু এক লৌহমানব।

    সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ১৯৯০ সালে ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার আতাতুর্ক মডেল হাইস্কুলে অধ্যয়নকালে জড়িয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগের পতাকাতলে। মেট্রিকুলেশন পাস করেন ১৯৯১ সালে। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হয়েই নির্বাচিত হন দাগনভূঞা ইকবাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি। এরপর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি, পর্যায়ক্রমে ২০০৩ সালে দায়িত্ব নেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির। ২০১১ সালে জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও ২০১৬ সালে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেন জেলা যুবলীগ সভাপতির। সু-সংগঠিত করেন জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে। দায়িত্ব পালনকালে সাংগঠনিক সফরে চষে বেড়িয়েছেন পুরো জেলা। সে সময়ে ছাত্রলীগের হয়ে আর এখন যুবলীগ। সফলভাবে উপহার দেন একের পর এক শক্তিশালী কমিটি। তার নেতৃত্বে ফেনী জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

    এছাড়া ২০০৯ সালে প্রথমবারের মত দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অবহেলিত দাগনভূঞা উপজেলার সামগ্রিক উন্নয়ন, দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাস-মাদক বন্ধে সোচ্চার হওয়া ও প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন করে বেশ আলোচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে বিএনপির প্রার্থীকে প্রায় ৯৩ হাজার ভোটে হারিয়ে দ্বিতীয় দফায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সে ধারা অব্যাহত রাখেন এবং পরপর দু’বার চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

    দলীয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সমুন্নত রেখে দিদারুল কবির আওয়ামী রাজনীতির জন্য শুধু নিজেকেই বিলিয়ে দেননি, ১৯৯৮ সালে সন্ত্রাসীদের হাতে হারিয়েছেন তারই আপন বড় ভাই আজিজুল কবির মিলনকে। তৎকালীন সরকারের দেয়া মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ১৩ দফায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ৪ বছর বিনা বিচারে কারাভোগ করেন। অর্ধশত মামলার আসামি হয়েছেন, বছরের পর বছর বাড়ি ছাড়া ছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং সন্ত্রাসীদের দেয়া ভয়াবহ আগুনে হারিয়েছেন বসতঘরটি।

    সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর জানায়, উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে (২০০৯-২০১৬) মেয়াদে দাগনভ‚ঞা উপজেলায় সমতার ভিত্তিতে প্রায় ১২৯ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ ও মেরামত করেছেন। এসব প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। পাকাকরণ ও সংস্কারের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে আরও অন্তত ২০ কিলোমিটার সড়ক।

    Processed with MOLDIV

    স্থানীয় সরকারের অর্থে দাগনভূঞা-সোনাগাজী উপজেলার মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনকারী একমাত্র মিয়াজীর ঘাট সেতু, হীরাপুর-খুশিপুর সংযোগ সেতু, কৈখালী সেতু, তালতলী ঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের পথে।

    প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও অভূতপূর্ব উন্নয়নের পাশাপাশি ইকবাল মেমোরিয়াল কলেজের ৪ তলা বিশিষ্ট আইসিটি ভবন, কামাল আতাতুর্ক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা নতুন একাডেমিক ভবন, রামনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ তলা ভবন, রাজাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের বহুতল ভবন, উত্তর আলীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩ তলা ভবন ও বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনসহ শিক্ষা খাতেও ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেন।

    এদিকে তৃণমূল থেকে ২৬৭ ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) আসনে দিদারের প্রার্থীতার জন্য প্রায় প্রতিদিনই নেতা-কর্মীরা দাবি জানিয়ে আসছে। জানা গেছে, জেলার সবকটি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সম্পাদকরা বয়োবৃদ্ধ। এসব বয়োবৃদ্ধ নেতা হতে শুরু করে সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের প্রত্যেকের সঙ্গে তার রয়েছে ঘনিষ্ঠতা। যার যে সম্মান প্রাপ্য তিনি সেভাবেই সিনিয়রদের সম্মান করেন। মূল্যায়ন করেন দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের। দলের কর্মী-সমর্থকদের দুঃখ দুর্দশা তিনি অনুধাবন করেন এবং সেভাবেই সামর্থ অনুযায়ী সমস্যার সমাধান করেন। তিনি বয়সের তুলনায় যথেষ্ট সম্মানী ও জনপ্রিয়। অথচ তার মধ্যে কোন অহংকার নেই। কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করার দুর্নাম ও নেই তার। তিনি মনোনয়ন পেলে অবশ্যই জয়ী হবেন। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নিবেদিতপ্রাণ তরুণ অথচ যোগ্য প্রার্থী দিদারুল কবির রতনকে প্রার্থী দিলে দল-মত সবাই এক হয়ে কাজ করবে। তবে শেষতক দলীয় টিকিট কে পাবেন সে অপেক্ষায় রয়েছেন ভোটাররা।

    সম্পাদনা : এএএম/এটি


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090