আজ

  • মঙ্গলবার
  • ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিতে কেউ দেখেনি’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিতে কেউ দেখেন নি বলে দাবি করেন আসামী পক্ষের আইনজীবী। সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নুসরাদের গায়ে আগুন দিতেও কেউ দেখেন নি। কোন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীও নেই দাবি করেছেন আসামী উম্মে সুলতানা পপির কৌঁসুলী হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফারুক আহম্মদ।

    সোমবার ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার আসামী উম্মে সুলতানার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে ফারুক আহম্মদ এ দাবি করেন। উম্মে সুলতানা পপি নুসরাতের সহপাঠী ও আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন।
    সোমবার হাইকোর্টের এ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফারুক আহম্মদ উম্মে সুলতানা ছাড়াও আসামী শাহাদাত হোসেন শামীম, কামরুন নাহার মনি, জোবায়ের আহম্মদ, হাফেজ আবদুল কাদের ও ইফতেখার উদ্দিন রানা, নুর উদ্দিনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তাঁকে সহায়তা করেন ফেনী বারের আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন খান, মোহাম্মদ ইসহাক, মো. সিরাজুল ইসলাম। এছাড়া মামলার অন্যতম আসামী মাকসুদ আলম কাউন্সিলারের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থপন করেন ফেনী বারের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।

    ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে সোমবার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের নবম দিন আসামী পক্ষে এভাবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। আজ মঙ্গলবার এ মামলায় দশম দিনের মত আসামীদের পক্ষে যুক্ততর্ক উপস্থাপনের কথা রয়েছে।

    আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, নুসরাতের গায়ে আগুন লাগার দিন আসামী মাকসুদ আলম কাউন্সিলার ফেনী ছিলেন না। কোন স্বাক্ষী তাঁর নামও বলেন নি। তিনি দাবি করেন- নুসরাতের মৃত্যুর পর ঢাকা মেডিকেলের ফরসেনিক রিপোর্ট, পোষ্টমটেম সার্টিফিকেটে হত্যার কথা বলেন নি। দাহ্য পদার্থের আঘাতে নুসরাত নিহত হয়েছে-একথা পোষ্টমটেম রিপোর্টে নাই। তিনি দাবি করেন-এটি আত্মহত্যাও হতে পারে।

    আদালতে আসামী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মদ দাবী করেন, ৪ এপ্রিল রাতে মাদ্রাসা নুসরাত হত্যার কথিত পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হতে কেউ দেখেন নি। কোন প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী নেই। তিনি বলেন, মামলার অভিযোগপত্রে কালো বোরকার কথা উল্লেখ করা হলেও আসামী উম্মে সুলতানার বাড়ী থেকে একটি নেভী ব্লু রংয়ের বোরকা উদ্ধার করা হয়। ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাদে নুসরাতের নিকট থেকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে মর্মে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ ধরনের কোন কাগজ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

    প্রসঙ্গত; গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ৮ এপ্রিল তাঁর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলাটি ১০ এপ্রিল পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম তদন্ত শেষে ২৯ মে ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ৫ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অভিযোপত্রভূক্ত ১৬ জন আসামীর মধ্যে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১২জন ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

    ফেনী ট্রিবিউন/ এএএম/এটি/এপি


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090