দিনমান নানা আয়োজন ও আনন্দ হৈ-হুল্লোড়ে ২২ মে রোববার বিপিজেএ ফেনীর ঈদ পুনর্মিলনী রামগড়ের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ফেনী জেলা শাখার আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি এম. এমরান পাটোয়ারী ও সাধারণ সম্পাদক মীর হোসেন রাসেল।
ঈদ পুনর্মিলনীতে অংশগ্রহণ করে একে ছন্দময় করেন- যুগ্ম সম্পাদক শেখ আশিকুন্নবী সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল তালুকদার, দপ্তর সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম মামুন, কোষাধ্যক্ষ ইয়াসির আরাফাত রুবেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাজিম চৌধুরী, ক্রীড়া সম্পাদক জাহিদ হোসেন রনি, কার্যকরী কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ আল-মামুন, সুরঞ্জিত নাগ। সাধারণ সদস্য মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া লিংকন, কাজী নজরুল ইসলাম সোহাগ, আফতাব উদ্দিন, মোল্লা মো. ইলিয়াস।
সকালে দুটি গাড়ি ফেনী শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্রাংক রোডের দোয়েল চত্বর থেকে রওয়ানা হয় খাগড়াছড়ির রামগড়ের উদ্দেশ্যে। পথে হেয়াকো বাজারে সকালের নাস্তা সেরে গাড়ি চলছে আলোচিত সেই সেলফি রোডে। সেখানে নেমে সেলফি তোলার ধুম পড়ে। অনুষ্ঠিত হয় গ্রুপ ফটোসেশন। ছবি তোলা সাঙ্গ করে গাড়ি চলে রামগড়ের ঝুলন্ত সেতু ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্যের উদ্দেশ্যে। সেখানে পাহাড়—লেকের প্রাকৃতিক অপরুপ সৌন্দর্য অবলোকন করে সবাই মুগ্ধ।
ঝুলন্ত সেতু ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্যের দৃশ্যপট ক্যামেরায় ধারণ কেউই মিস করেনি। পাহাড়ি জনপদে মানুষের জীবনধারা সত্যিই বৈচিত্রময়। জনপদের দৃশ্যপট ধারণ করতে চলে ক্লিক এর পর ক্লিক। এবার গাড়ি পৌঁছে যায় রামগড়ের এসডিওর বাংলোয়। সেখানে আনন্দ হৈ-হুল্লোড়ে শুরু হয় বাস্কেটে বল নিক্ষেপ খেলা। এতে সকল সদস্য অংশগ্রহণ করেন। এখানে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণ শেষে ছবির পর্ব শেষ করে গাড়ি রওয়ানা দেয় রামগড় হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্দেশ্য।
হর্টিকালচার এ প্রবেশ করতেই উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা ভুবন মহাজনের আতিথীয়তায় সত্যিই মুগ্ধ হয়েছে সাংবাদিকরা। এখানে প্রবেশ করে সবাই যেন হারিয়ে গেছে ফলে রাজ্যে। হাটি হাটি পায়ে পায়ে সবাই গাইতে থাকে “এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি”। পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে সেখানেই চলে খেলার দ্বিতীয় আয়োজন অন্ধের হাড়ি ভাঙ্গা। বাঁধভাঙ্গা আনন্দে সবাই অংশগ্রহণ করে এ প্রতিযোগিতায়। এ সময় দৃশ্যপটগুলো ভিডিও ধারণ করে স্মৃতিময় করে রাখেন সংগঠনের সদস্য সুরঞ্জিত নাগ। যথারীতি খেলা শেষে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী, ছবি আর ছবি তোলা, আর হৈ—হুল্লোড়ে বাঁধভাঙ্গা আনন্দে ফেটে পড়ে সবাই।
এবার দুপুরের খাওয়ার পালা, গাড়ি পৌঁছে যায় লেকের অপরূপ সৌন্দর্যের উপর নির্মিত গোধূলী রেস্টুরেন্টে। সেখানে সংগঠনের সদস্যদের অভ্যর্থনা জানান ও আনন্দ ভাগাভাগি করেন রামগড়ের দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি নিজাম উদ্দিন ও দৈনিক মানবজমিন প্রতিনিধি এমদাদুল হক খোন্দকার।
দুপুরের খাওয়া পর শেষ আয়োজন বেলুন ফুটানো খেলা। এজন্য সদস্যরা পৌঁছে যায় সেই সেলফি রোডে। এক স্বর্গীয় আনন্দে মেতে ওঠে সবাই বেলুন ফুটানো প্রতিযোগিতায়। রোমাঞ্চকর আনন্দেই শেষ হয় বেলুন ফুটানো প্রতিযোগিতা। সেখানেও প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী, এবার পুরস্কারের পালা। রাবার বাগানে শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী পর্ব। তিনটি খেলায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেন সংগঠনের সভাপতি এম. এমরান পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মীর হোসেন রাসেল ও ঈদ পুনর্মিলনী বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক সুরঞ্জিত নাগ। বিপিজেএ ফেনীর যুগ্ম সম্পাদক শেখ আশিকুন্নবী সজীব ও ক্রীড়া সম্পাদক জাহিদ হোসেন রনি’র তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত খেলার একটিতে প্রথম ও অন্যটিতে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র সদস্য আবদুল্লাহ আল-মামুন।
সফল কর্মসূচী বাস্তবায়ন করায় সকলকে অভিবাদন জানান সংগঠনের সভাপতি। সবধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
ফেরার পথে হেয়াকো বাজারে চলে ফল কেনার ধুম। সকল সদস্য লিচু, কাঁঠাল, আনারসসহ বিভিন্ন ফলে গাড়িকে করে তোলেন ফলময়। দিনমান আনন্দময় মুহূর্তগুলোর স্মৃতি পেছনে ফেলে গাড়ি ছুটে চলে আপন নীড় ফেনীর উদ্দেশ্যে। রাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে সবাই মহান রবের শুকরিয়া আদায় করেন।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি