ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলায় তিন পুলিশ সদস্যসহ আরো পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সোমবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে সাক্ষ্য দেন কনস্টেবল মো. রাসেল হোসেন, সোনাগাজী মডেল থানার এসআই ডিএইচ এম জহির রায়হান, এএসআই মো. আরিফুর রহমান, নুসরাতের জেঠাতো ভাই ওমর ফারুক ও চাচা আজহারুল হক এমরান।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হাফেজ আহাম্মদ বলেন, নুসরাত হত্যা মামলার ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার মো. ফজলুল করিম, রাবেয়া আক্তার, মোয়াজ্জেম হোসেন ও মো. জাফর ইকবালের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছে আদালত।
পুলিশ কনস্টেবল মো. রাসেল হোসেন তার জবানবন্দিতে বলেন, ঘটনার দিন সকালে আমি ওই মাদরাসার গেটে দায়িত্ব পালন করছিলাম। সকাল আনুমানিক পৌনে ১০টার দিকে ‘আগুন-আগুন’ চিৎকার শুনতে পাই। ওই সময় একটি মেয়েকে গায়ে আগুন নিয়ে সাইক্লোন শেল্টারের সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসতে দেখি। তার চিৎকারে শেল্টারের সামনে অনেকেই জড়ো হন। তখন আমি এগিয়ে গিয়ে তাকে নামিয়ে আনি। এ সময় তার গায়ে আগুন জ্বলছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে আমার হাতের একাংশ পুড়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে অটোরিকশায় করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। পরে ওই ভবনের ছাদ থেকে বেশকিছু আলামত উদ্ধার করা হয়।
নুসরাতের জেঠাতো ভাই ওমর ফারুক ও চাচা আজহারুল হক এমরান বলেন, ৬ এপ্রিলের ঘটনার পর নুসরাতের পড়ার ঘর থেকে যে খাতা উদ্ধার করা হয়েছে- তাতে সে অনেক কিছুই লিখে রেখে গেছে। কীভাবে অধ্যক্ষ সিরাজ তাকে যৌন হয়রানি করেছে তারও উল্লেখ ছিল সেই লেখায়।
সোনাগাজী মডেল থানার এএসআই মো. আরিফুর রহমান বলেন, ৯ এপ্রিল বিকেলে আমি নুসরাতের বাড়িতে যাই এবং তার কক্ষের পড়ার টেবিল থেকে ৩৮ পৃষ্ঠার একটি খাতা স্বজনদের উপস্থিতিতে উদ্ধার করি। ওই খাতার ১ থেকে ৮ পৃষ্ঠা পর্যন্ত নুসরাত ২৭ মার্চের ঘটনার বিষয়ে বেশকিছু কথা লিখে রেখে গেছেন। বিশেষ করে ৭ ও ৮নম্বর পৃষ্ঠায় অধ্যক্ষের যৌন হয়রানি বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী পিবিআইয়ের ওসি মো. শাহ আলম বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে আদালতে নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামি উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিপক্ষের কৌঁসুলিরা তাদের জেরা করেন।
সম্পাদনা : এএএম/এমআর