সোনাগাজীতে মাত্র এক শতক জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আলী আহম্মদ (৮০) নামে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চর খোয়াজ গ্রামের মনোহর আলী বাড়িতে এঘটনা ঘটে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, উপজেলার চর খোয়াজ গ্রামের মনোহর আলী বাড়ির বৃদ্ধ আলী আহম্মদের ছেলেদের সঙ্গে তাদের বসত ঘরের সামনের এক শতক জমি নিয়ে একই বাড়ীর আবু তাহেরের ছেলে হক সাহাব ও ইসমাঈল হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধপূর্ণ জায়গা নিয়ে স্থানীয় ভাবে একাধিকবার শালিশী বৈঠক হয়ে ছিল। শালিশী বৈঠকের রায় না মানায় উভয় পক্ষ আদালতেও একাধিক মামলা করে। মামলাগুলো বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
শুক্রবার সকালে হক সাহাব ও ইসমাঈল হোসেন ৮/১০জন ভাড়াটে সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিরোধপূর্ন জায়গা দখল করে অবৈধ ভাবে ঘর নির্মাণ করার চেষ্টা চালায়। এসময় বৃদ্ধ আলী আহম্মদ বাঁধা দিতে গেলে হক সাহাব ও ইসমাঈলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা বৃদ্ধকে পাথরের পিলার ও লোহার রড় দিয়ে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। এসময় চিৎকার দিয়ে বৃদ্ধ আলী আহম্মদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে বৃদ্ধ ছেলে ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বৃদ্ধ আলী আহম্মদের ছেলে মফিজুল হক বলেন, তাঁর বৃদ্ধ পিতাকে কোন কারণ ছাড়াই হক সাহাব ও ইসমাঈলসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। তিনি বলেন, এর আগের রমজান মাসে হক সাহাব ও ইসমাঈল মিলে একই জায়গাকে কেন্দ্র করে তাদের উপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে বৃদ্ধের মেয়ে সুফিয়া আক্তার ও ছেলে শাহ আলমকে আহত করেছিল। এ ঘটনায়ও আদালতে মামলা চলছে।
বৃদ্ধের আরেক ছেলে মোশাররফ হোসেন বলেন, তাঁর পিতাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় হক সাহাব ও ইসমাঈলসহ ১০-১২জনকে আসামী করে থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খবর পেয়ে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক আরাফাত হোসেন বলেন, ধারনা করা হচ্ছে বুকে আঘাত জনিত কারণে বৃদ্ধ আলী আহম্মদের মৃত্যু হতে পারে।
সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন হালদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বৃদ্ধের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফেনী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ বুঝা যাবে। এঘনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্পাদনা : এএএম/এএইচ