ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহানের আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার রায় আগামী ২৮ নভেম্বর।
আজ বুধবার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হলে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন রায় ঘোষণার এই তারিখ ধার্য করেন।
সাইবার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নজরুল ইসলাম শামীম প্রথম আলোকে বলেন, ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আদালত আগামী ২৮ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন।
আদালতের পেশকার শামীম আল মামুন জানান, এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১২ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় গত ১২ নভেম্বর।
রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন পিপি নজরুল ইসলাম শামীম। আর বাদীপক্ষে যুক্তিতর্ক আদালতে তুলে ধরেন বিভূতিভূষণ সরকার। আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ।
গত ১৭ জুলাই সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সেদিন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি নির্দোষ।
ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গত ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালত তা আমলে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন। এর ২০ দিনের মাথায় গত ১৬ জুন মোয়াজ্জেম হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
নুসরাত জাহানকে গত ৬ এপ্রিল পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেন তাঁর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। ১০ এপ্রিল সে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এর ১০ দিন আগে নুসরাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সেসময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ আনা হয় মামলায়।
ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় গত ২৪ অক্টোবর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি