আজ

  • বৃহস্পতিবার
  • ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ফেনী ইউনিভার্সিটিতে প্রথম সমাবর্তন ২৩ সেপ্টেম্বর, পুরো ক্যাম্পাসে সাজ সাজ রব

  • আবদুল্লাহ আল-মামুন
  • প্রথম সমাবর্তন সামনে রেখে ফেনীর বারাহীপুরস্থ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এখন সাজ সাজ রব। নয়নাভিরাম সাজে সাজছে পুরো ক্যাম্পাস। এখানে আয়োজন করা হবে সমাবর্তন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অতিথিদের হাত থেকে ডিগ্রি নেয়ার অপেক্ষায় গ্র্যাজুয়েটরা।

    আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ফেনী ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তন উপলক্ষে বুধবার ফেনী ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এম জামাল উদ্দীন আহমদ।

    এসময় উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক তায়বুল হক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হারুন আল রশীদ, রেজিস্ট্রার এ এস এম আবুল খায়ের, ডেপুটি রেজিস্ট্রার সহ শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ।

    সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সকাল সাড়ে ১০টায় সমাবর্তনের মূল কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর দুপুরের খাবার শেষে বিকেলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে দেশসেরা ব্যান্ড ‘শিরোনামহীন’ এর পরিবেশনা।

    অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিব্বুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যামিরাটস্ প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। ফেনী ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহের, কনভোকেশন স্পীকার হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন ফেনী ইউনিভার্সিটি ভিসি প্রফেসর ড. এম. জামাল উদ্দিন আহমেদ।

    সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মঞ্চ এবং সামিয়ানা নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। স্থাপন করা হয়েছে সমাবর্তন স্থলে বেশ কিছু স্টল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন রঙিন আলোতে সাজানো হয়েছে। প্রধান ফটক থেকে বিভিন্ন সড়কের পাশে সমাবর্তন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, ডিজাইনসমৃদ্ধ গেইট ও বিভিন্ন তথ্যসংবলিত নির্দেশিকা টানানো হয়েছে।

    রেজিস্ট্রেশন করা শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে দল বেঁধে এসে সংগ্রহ করেছেন গাউন, টুপি এবং কিটস। দীর্ঘদিনের স্মৃতিবিজড়ীত ক্যাম্পাস দেখে হয়ে পড়েছেন স্মৃতিকাতর। পাশপাশি পুরোনো বন্ধুদের সাক্ষাত পেয়ে হয়ে পড়েছেন আবেগাপ্লুত। একসাথে অংশগ্রহণ করছেন ফটোসেশানে, এ যেনো এক মিলন মেলা যা সমাবর্তনের আনন্দকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। ফলে সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে বইছে উৎসবের আমেজ।

    এ সমাবর্তনে মোট ৩৫১ শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এদের মধ্যে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ৯১ জন, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ১৬৫ জন, কলা, সমাজ বিজ্ঞান ও আইন অনুষদের ৮৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

    মোট ২০ জনকে স্বর্ণপদক দেয়া হবে। তন্মধ্যে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক ১০ জনকে এবং অবশিষ্ট ১০ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর পদক প্রদান করা হবে। তাদের মধ্যে দুইজন আছেন বর্তমান ফেনী ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি মেম্বার। একজন হলেন ফেনী ইউনিভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টের সহকারি অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান বুশরাত জাহান বিপাশা এবং অন্যজন হলেন ইইই ডিপার্টমেন্টের প্রভাষক তানভীর হোসেন। তারা দুই জনই রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক লাভ করবেন।

    এদিকে প্রতিষ্ঠার মাত্র ১১ বছরেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে দেশের স্বনামধন্য প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফেনী ইউনিভার্সিটি (এফইউ)। প্রথমবারের মতো এই সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন গ্র্যাজুয়েটরা। প্রথম সমাবর্তন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাই উদ্বেলিত। অতিথিদের কাছ থেকে ডিগ্রি নেয়ার অপেক্ষায় আছেন গ্র্যাজুয়েটরা।

    ফেনী ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে আধুনিক সময়ের উপযোগী বিভিন্ন বিভাগ যেমন- বিবিএ, এমবিএ, ইএমবিএ, এলএলবি (সম্মান), ইংলিশ (সম্মান), পিজিডি এলআইএস, সিভিল, সিএসই, ইইই, গণিতে মাস্টার্স। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে রয়েছে বৃত্তির সুযোগ।

    বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

    ফেনী ইউনিভার্সিটি ট্রেজারার প্রফেসর তায়েবুল হক বলেন, ‘সমাবর্তনের দিনটি আমাদের জন্য এক বিশেষ মাইলফলক। কারণ এই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে সমাবর্তনের মাধ্যমে সার্টিফিকেট তুলে দিতে পারছি। এর জন্য আমি আমাদের ফ্যাকাল্টি, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাইসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’

    তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসটি হবে পরিবেশবান্ধব। এখানে আধুনিক ভবন, বিশাল খেলার মাঠ থাকবে। সর্বাধুনিক ল্যাব, স্টুডিও, লাইব্রেরি, থিয়েটার, স্টাডি জোনের সঙ্গে থাকছে শিক্ষার্থী লাউঞ্জ, অবসর কাটানোর জায়গা, ফুড লাউঞ্জসহ বিভিন্ন সুবিধা। বিশ্বমানের স্থাপত্য নকশায় গড়ে তোলা হবে বিশ্ববিদ্যালয়টির নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাস।

    ফেনী ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. জামালউদ্দীন আহমদ, এফআরএসসি, এফআরএস বলেন, “প্রথম সমাবর্তনের মাধ্যমে রাষ্ট্র কর্তৃক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। তাই প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন ফেনী ইউনিভার্সিটির ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।”

    ফেনী ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তন উপলক্ষে ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বলেন, “ফেনী ইউনিভার্সিটিকে একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের রয়েছে সুনির্দিষ্ট ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা। যার অন্যতম একটি হল স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ। আমরা ইতিমধ্যে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছি যা দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।”

    ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090