আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফেনী সদরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীতা নিয়ে গোলক ধাঁধায় পড়েছে দলীয় নেতাকর্মীরা। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীলের নাম ঘোষণা দিয়ে কেন্দ্রে পাঠানোর পর ফের আলোচনায় উঠে আসে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বি.কমের নাম। এনিয়ে কোন দায়িত্বশীল পর্যায়ের নেতা ইতিমধ্যে প্রকাশ্য মন্তব্য না করলেও কর্মী-সমর্থকদের আলোচনা-সমালোচনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরগরম। অন্যদিকে দুই জনের বাইরে আরেক মজিব সৈনিকের নাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ চায়ের টেবিলে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। তিনি মার্কেন্টাইল ব্যাংক কোরাইশমুন্সি শাখার ম্যানেজার মনোয়ার হোসেন সেন্টু।
সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, যেহেতু সদর উপজেলায় প্রার্থীতা নিয়ে আওয়ামী লীগে ধাঁধা তৈরি হয়েছে। আর বিএনপিও নির্বাচনে আসছে না। সেখানে ক্লিন ইমেজধারী শিক্ষিত ও শহরের মহিপালের কৃতি এই সন্তান মনোয়ার হোসেন সেন্টুকে মানুষ লুফে নিতে পারে। তিনি সকলের কাছে গ্রহনীয় প্রার্থী হবেন। দল-বল নির্বিশেষে তাকে নির্বাচিত করার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মজিব আদর্শের সৈনিক মনোয়ার হোসেন সেন্টু ১৯৮৮ সালে ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুলে ৮ম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালীন তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক বাহারের হাত ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়। তিনি ছাত্রলীগের সদস্য হন। ১৯৯১ সালে তিনি এসএসসি পাশের পর ফেনী সরকারী কলেজে ভর্তি হন ওই বছরই ছাত্রলীগ ক্লাস কমিটির সম্পাদক প্রার্থী হন। তার সাথে সভাপতি প্রার্থী হন শেরশাহ। একই বছর ফেনী সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিতে তিনি যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে সেন্টু ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রলীগের আহবায়ক নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে ১৯৯৫-৯৬ সালে বিশ^বিদ্যালয় থেকে ‘বেদনার সিড়ি’ নামে স্মরনিকা প্রকাশ করা হয়। ওই বছরই মনোয়ার হোসেন সেন্টু বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবাশীষ-স্বপন কমিটির সহ-সম্পাদক নির্বাচিত হন। একই সময় তিনি ডেমরা থানা ছাত্রলীগের ১নং সদস্য ও ৯৬-৯৭ সালে ওই থানার শুভ্র-কবির কমিটির শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি ঢাকাস্থ ফেনী ছাত্র সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে মাস্টার্স শেষ করে তিনি সুইফট্ এ্যাডভাটাইজিং নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে তিনি মার্কেন্টাইল ব্যাংকে অফিসার হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার কোরাইশ মুন্সি শাখার ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করেন। এছাড়া তিনি মানব কল্যাণে নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। সেন্টু ফেনী অফিসার্স ক্লাবের কার্যকরী কমিটির সদস্য, রোটারী ক্লাব অব ফেনী সিটির প্রেসিডেন্ট ও চাঁড়িপুর ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেন্টুকে প্রার্থী হতে অনেকে স্ট্যাষ্টাস দেন। তারা তাকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে আহবান ও উৎসাহ দেন। অনেকে উল্লেখ করেন- সেন্টুর মাঝে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রয়াত আনিসুল হকের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন। তারা উল্লেখ করেন- শিক্ষিত, চৌকষ, সৃজনশীল এই ব্যক্তির মাধ্যমে ফেনী সদর উপজেলায় আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকে ফেনী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন চেয়েছেন। তাদের দাবী দলেতো অনেক যোগ্য ও ত্যাগী লোক রয়েছে একজন কেনো বার বার চেয়ারম্যান হবেন। বাকীরা কি কখনো সুযোগ পাবে না? এনিয়ে দলের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে তারা দলীয় সভানেত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন।
সম্পাদনা : এএএম/এমপি