কমলা আর বাতাবি লেবুর সংকরায়নে মাল্টার জন্ম। বিদেশি এ ফলটির দেশি জাত বারি-১। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এ জাতের উদ্ভাবক। বারি-১ বাংলাদেশে জন্মে, ভালো ফলনও দেয়। মাল্টার চাষ পাহাড়ি জমিতে সীমাবদ্ধ ছিল। এখন উঁচু জমি ছেড়ে সমতলে নেমেছে এর চাষ। ফেনীর ফুলগাজীতেও সফল হয়েছে রসালো মিষ্টি মাল্টার চাষ। এখানে এখন এই ফলের বাম্পার ফলন হচ্ছে।
অকৃষি সমতলভূমিতে চাষের লক্ষ্যে বছর তিনেক আগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বারি-১ জাতের মাল্টার চারা দেয় ফুলগাজীর কৃষকদের। ১০ শতাংশ আয়তনের ক্ষেতে তা রোপণ করেন চাষিরা। তাদেরই একজন উপজেলার জি এম হাট ইউনিয়নের বসিকপুর গ্রামের হারুন উর রশিদ। তিনি প্রশিক্ষণ নিয়ে ১০ শতক জমিতে ৫০টি মাল্টার চারা রোপণ করেন। তিন বছরে চারাগুলো উচ্চতায় ১৫ থেকে ২০ ফুট হয়েছে। ফুলে ফলে ছেয়ে গেছে গাছ।
হারুন উর রশিদ বলেন, রোপণের প্রথম বছরেই ফুল এসেছিল। গাছের স্বাস্থ্য রক্ষায় সেবার ফুল ছিঁড়ে ফেলেন। এ বছর প্রতিটি গাছে ৮০ থেকে ৯০টি মাল্টা ধরেছে। প্রতিটি মাল্টাই আকারে বড়, রসালো, খেতে মিষ্টি।
গত বৃহস্পতিবার হারুন উর রশিদের বাগান পরিদর্শন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ একেএম মনিরুল আলম। সঙ্গে ছিলেন প্রকল্পের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. গৌর গোবিন্দ দাস, মনিটরিং অফিসার কৃষিবিদ আবু নঈম মো. সাইফুদ্দিন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম।
মনিরুল ইসলাম বলেন, বারি-১ জাতের মাল্টা সুস্বাদু। পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা ভালো এমন লাল এবং দোআঁশ মাটি এ জাতের মাল্টা চাষের উপযোগী। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, আকারে অনেক বড়। বিদেশি জাতের মাল্টার মিষ্টতা টিএসএস-৯। বারি-১ মাল্টার মিষ্টতা
টিএসএস-১২। তাই দেশি মাল্টার কদর বেশি। ফুলগাজীতে মাল্টার ফলন দেখে তিনি অভিভূত। এ এলাকা মাল্টা চাষের উপযোগী। কৃষকরা মাল্টা চাষে লাভবান হবেন।
বাগান পরিদর্শনে এসে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলীম বলেন, বিদেশি ফল মাল্টা দেশেও কিছু পরিমাণে উৎপাদিত হয় বলে জানতেন। কিন্তু তার নিজ এলাকার বাগানে মাল্টার ফলন দেখে সেই ধারণা বদলে গেছে।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি