আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ ও ফেনী-৩ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে আবেদন করেছেন ছয় নারী নেত্রী। তাঁরা হলেন- ফেনী-১ আসন (ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম) থেকে বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় নেত্রী নাজমা আক্তার। অপরদিকে ফেনী-৩ আসন (সোনাগাজী ও দাগনভূঞা) থেকে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অভিনেত্রী রোকেয় প্রাচী ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক অভিনয় শিল্পী শমী কায়সার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আইনজীবী শাহানা আক্তার শানু মনোনয়নের আবেদন করেছেন।
ফেনী-১ আসনে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত টানা চার বার নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি একটি দূর্নীতির মামলায় কারাবন্দি রয়েছেন। তাঁর পক্ষে দলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু। এ আসনে খালেদা জিয়া ছাড়াও বিএনপি থেকে আবদুল আউয়াল মিন্টু, নুর আহম্মদ মজুমদারসহ ৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
এ আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কেন্দ্রীয় জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি এ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী। এছাড়া এ আসন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমসহ পাঁচজন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
এছাড়া এ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতার জন্য জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী নাজমা আক্তার।
ফেনী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক শমী কায়সার এবং বিএনপি থেকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আইনজীবী শাহানা আক্তার সানু।
রোকেয়া প্রাচী দীর্ঘদিন থেকে রাজধানীতে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন। গত দুই বছর যাবত এলাকায় নানা সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন। তাঁর পৈত্রিক বাড়ি সোনাগাজীর চর ছান্দিয়া গ্রামে।
এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক-শমী কায়সারও দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এক পরিচিত নাম। অভিনয়, প্রযোজনাসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা জড়িত। তাঁর বাবা ৭১ এর একজন শহীদ বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক-সাহিত্যিক শহীদুল্লা কায়সার। মা পান্না কায়সারও সাবেক সাংসদ, নানা সাংস্কৃতিক কাজে জড়িত রয়েছেন। তাঁর পৈত্রিক বাড়ি সোনাগাজীর নবাবপুর ইউনিয়নের মজুপুর গ্রামে।
এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী রয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল বাশার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী, জাপান আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল আলম ভুট্টুসহ ১৯ জন।
অপরদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহানা আক্তার সানু শিক্ষা জীবন থেকেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি ঢাকায় আইন পেশায় নিয়োজিত। পৈত্রিক বাড়ি সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের ছাড়াইতকান্দি গ্রামে।
এ আসনে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি নেতা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ-সভাপতি সোলায়মান ভূঞা, সাবেক ছাত্রদল নেতা নাজমুল করিম দুলালসহ ২৪ জন বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী।
এ আসনে প্রথমে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়পত্র সংগ্রহ-জমাদান ও পরে জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন এক-এগারোর আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। যোগদানের পর দিনই তাঁকে জাতীয় পার্টির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও পার্টি চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মনোনীত করা হয়েছে। এ আসনটি ২০১৪ সালেও মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া আসন থেকে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) কেন্দ্রীয় নেতা শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
সম্পাদনা : এএএম/এটি