বাংলা পঞ্জিকায় পরিবর্তন এসেছে। প্রথমবারের মতো ৩১ দিনে আশ্বিন মাস পূর্ণ হয়েছে। সে হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার পয়লা কার্তিক। এই সংস্কার করেছে বাংলা একাডেমি।
বাংলা একাডেমি জানায়, নতুন বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন—এই ছয় মাসের গণনা শুরু হবে ৩১ দিন হিসাবে। কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ ও চৈত্র—এই পাঁচ মাসের হিসাব হবে ৩০ দিনে। শুধু মাত্র ফাল্গুন মাসের গণনা শুরু হবে ২৯ দিন হিসেবে; তবে যে বছর গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিতে লিপইয়ার সে বছর ৩০ দিন হিসেবে গণনা করা হবে।
বাংলা বর্ষপঞ্জির এই সংস্কার করতে দীর্ঘদিন গবেষণা করতে হয়েছে বাংলা একাডেমিকে। মূলত জাতির ইতিহাসের গৌরবময় দিনগুলো বাংলা ও গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিতে অভিন্ন তারিখে সমন্বয় করতেই বাংলা বর্ষপঞ্জিতে এই সংস্কার আনা হয়েছে। যেমন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছিল ৮ ফাল্গুন, কিন্তু সাধারণত ২১ ফেব্রুয়ারি পড়ত ৯ ফাল্গুন।
পঞ্জিকার এই সংশোধনের ফলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারির প্রতিষঙ্গী বাংলা তারিখ হবে ৮ ফাল্গুন। জাতীয় দিবস ২৬ মার্চের প্রতিষঙ্গী তারিখ হবে ১২ চৈত্র। রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী ৮ মে’র প্রতিষঙ্গী তারিখ হবে ২৫ বৈশাখ। নজরুল জন্মজয়ন্তী ২৫ মের প্রতিষঙ্গী তারিখ হবে ১১ জৈষ্ঠ্য এবং বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বরের প্রতিষঙ্গী বাংলা তারিখ হবে পহেলা পৌষ।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালককে আহ্বায়ক করে ২০১৫ সালে বাংলা পঞ্জিকা সংস্কার কমিটি করা হয়। এই কমিটি বাংলা ও গ্রেগরিয়ান দিনপঞ্জির সমন্বয় করে। ২০১৯ সালের সরকারি গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকায় ১৪২৫-১৪২৬ সালের নতুন সুপারিশ করা বাংলা সনের তারিখ সমন্বয় করা হয়। সে অনুসারে সরকারি দিনপঞ্জিকায় গতকাল ১৬ অক্টোবর ৩১ আশ্বিন উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলা ১৪০২ সাল থেকে যে বর্ষপঞ্জি এতদিন দেশে প্রচলিত ছিল তা মুহম্মদ তকীয়ূল্লাহ্ সংস্কৃত নতুন নিয়মের ‘শহীদুল্লাহ বর্ষপঞ্জি’। এই বর্ষপঞ্জি অনুসারে বৈশাখ থেকে ভাদ্র প্রতিমাস ৩১ দিন এবং আশ্বিন থেকে চৈত্র প্রতিমাস ৩০ দিন। অধিবর্ষে ৩৬৬ দিন বছর গণনায় ফাল্গুন মাস ৩১ দিন। যে বাংলা সালকে ৪ দিয়ে ভাগ করলে ২ অবশিষ্ট থাকে সেই বাংলা সাল অধিবর্ষ বা লিপইয়ার হিসেবে গণ্য হয়।
ফেনী ট্রিবিউন/এনকে/টিআরএইচ