আজ

  • মঙ্গলবার
  • ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘কারাগারে বসে হত্যার ষড়যন্ত্র সম্ভব নয়’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলায় প্রধান আসামী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস.এম সিরাজ উদ দৌলা কারাগারে বন্দি অবস্থায় থেকে হত্যাকান্ডের মত কোন ষড়যন্ত্র করেন নি, করা সম্ভবও নয়। কারাগারের ফটকে দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলতে হয় ৩-৪ ফুট দূর থেকে। জোরে জোরে কথা বলতে হয়। সেখানে কারারক্ষীরা উপস্থিত থাকেন। তাহলে আসামী কি বলেছেন-কারারক্ষীসহ অন্যরাও শুনতে পায়। মঙ্গলবার মামলার যুক্তিতর্কের পঞ্চম দিন আসামী সিরাজ উদ দৌলার পক্ষে এভাবে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁর আইনজীবী ফারুক আহম্মদ।

    ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে মঙ্গলবার মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পঞ্চম দিন আসামী পক্ষে হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফারুক আহম্মদ এভাবেই আইনগত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তাঁকে সহায়তা করেন ফেনীর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও আহসার কবীর বেঙ্গল। আগামীকাল বুধবার তিনি মামলার প্রধান আসামী সিরাজ উদ দৌলার পক্ষে তাঁর অসমাপ্ত যুক্ততর্ক উপস্থাপনের কথা রয়েছে।

    আদালতে আসামী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মদ বলেন, কারাগার একটি নিরাপদ স্থান। বন্দিদের সাথে কেউ কারা ফটকে দেখা করতে গেলেও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় (সিসি ক্যামেরা) সেটা দৃষ্টমান হওয়ার কথা। কিন্তু ওই সময় সিসি ক্যামেরা নষ্ট ছিল। জেল সুপার বা কারারক্ষীরা কেউ কোন কথা শুনতে পায়নি। তিনি বলেন, মামলার ৮৭ জন স্বাক্ষীর মধ্যে কোন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী নেই। মামলার বাদীসহ ১৭জন স্বাক্ষী বলেছেন- তারা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি তখন কারাগারে ছিলেন।
    মামলার অন্য আসামীদের যোগসাজশে অধ্যক্ষ সিরাজ কারাগার থেকে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার হুকুম দেওয়া হয়েছে মর্মে অভিযোগ রাষ্ট্র পক্ষ প্রমান করতে পারেনি।

    আসামী পক্ষের আইনজীবী বলেন, ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতের মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলা করেন। এ মামলা থেকে বাঁচার জন্য কেউ হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্র করে না। অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাও সেটি করেন নি।

    আইনজীবী ফারুক আহম্মদ বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলম জেরার সময় ১৬৪ ধারা দেখে দেখে বলেছেন। নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি আদায় করেছেন। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিসহ অন্যান্য বিষয়ে বুধবার আবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কথা রয়েছে।

    প্রসঙ্গত; গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ৮ এপ্রিল তাঁর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলাটি ১০ এপ্রিল পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।
    এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম তদন্ত শেষে ২৯ মে ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ৫ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অভিযোপত্রভূক্ত ১৬ জন আসামীর মধ্যে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১২জন ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

    ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এপি/এটি


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090