ফেনী শহরের সেনসিভ হাসপাতালের মালিকানা দাবি করে বুধবার দুপুরে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়ালসহ মালিকগন।
তারা দাবি করেন- হাসপাতালের ম্যানেজার ফেনী জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন জসিম চেয়ারম্যান তাদের প্রতিষ্ঠান ৫ বছর পরিচালনা করে, বাড়ি ভাড়া ও আয় ব্যয়ের হিসাব না দেয়ায় তারা তাদের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে গত শনিবার হাসপাতাল থেকে রোগী বের করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন।
তারা আরো দাবি করেন, ঘটনাটি রাজনৈতিক কারনে না ঘটলেও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বিবৃতির সাথে দ্বিমত প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন করেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১১ সালে সৈয়দিয়া টাওয়ারের মালিক মো. এনায়েত উল্যার সাথে ৫৪ লাখ টাকা জামানত দিয়ে সেনসিভ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করি। যন্ত্রপাতিসহ প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা আমরা বিনিয়োগ করি। ২০১১ সালের ২৬ নভেম¦র প্রতিষ্ঠানটির আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানে সাইফুল ইসলাম চেয়ারম্যান, শেখ ফরিদ স¦পন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মো. আবদুল আউয়াল ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত¦ পালন করেন। প্রায় ১৮ মাস ব্যবস্থাপকের দায়িত¦ পালন অবস্থায় শেখ ফরিদ স্বপন নানান অনিয়মে জড়িয়ে পড়লে তার বিনিয়োগকৃত টাকা ও মুনাফা দিয়ে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান ফেনীর বাহিরে থাকায় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এঅবস্থায় ২০১৩ সালের জুলাই মাসে সেনসিভ হাসপাতালটি পরিচালনা করার জন্য জাকির হোসেন জসিমকে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মৌখিক চুক্তিতে ভাড়া দেয়া হয় ও তাকে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত¦ দেওয়া হয়। তিনি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে বাড়ী ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, স্টাফ বেতন, ডাক্তার বেতনসহ যাবতীয় কার্যক্রম স¤পাদন করে প্রতিষ্ঠান মালিকদের সাথে আয় ও ব্যয় হিসাব উপস্থাপন করবেন মর্মে চুক্তিবদ্ধ সিদ্ধান্ত হয়।
কয়েক মাস বাড়ি ভাড়া দেয়ার পর হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য সব কিছুর বিল পরিশোধ করা বন্ধ করে দেন জসিম। অদ্যাবধি বাড়ী ভাড়া বিদ্যুৎ বিল সহ যাবতীয় পাওনা দেনা বন্ধ করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সমুদয় টাকা নিজ হেফাজতে নিয়ে যান। তার স্ত্রী লুৎফুন নাহার পারভিনকে ভাইস চেয়ারম্যান করে প্রায় ৮০ লাখ টাকা সরিয়ে নেন। প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছে কোন আয় ব্যয় হিসাব উপ®হাপন না করে জোর পুর্বক প্রতিষ্ঠানটি দখল করে নেন। এনিয়ে জসিম উদ্দিনকে বার বার বসে বিষয়টি সমাধানের জন্য তারিখ নির্ধারণ করলেও তিনি কোন কিছু কর্ণপাত করেন নাই। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে কয়েকবার সালিশ হলেও তিনি আমলে নেননি। দীর্ঘদিন যাবৎ বাডী ভাড়া না দেওয়ায় ঘরের মালিক ভাড়া না দেয়ায় উকিল নোটিশ পাঠিয়ে ভবনটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন। বিষয়টি আমরা ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতি, ফেনী মডেল থানা, ফেনী পুলিশ সুপার ও স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে বিষয়টি অবহিত করি। কিন্তু কোন স্থানে সালিশী বৈঠকে ডাকা হলে তিনি উপস্থিত না হয়ে, প্রভাব খাটিয়ে নানাবিধ ভয়ভীতি ও খুন হত্যা ও প্রাননাশের ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি প্রদান করে। ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতার কারণে ফেনী মডেল থানায় সাধারন ডায়েরী করি।
আমরা দল মতের উর্ধে এসে ব্যবসায়িক পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধ পরিকর। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তি ব্যবসায়িক দ্বন্ধের ঘটনাকে রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এঘটনায় ছাত্রলীগ যুবলীগের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ পত্র-পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে আমাদেরকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করছে ও প্রতিষ্ঠানের সম্মানহানী ঘটছে। সাইফুল ইসলাম ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন।
সম্পাদনা : এএএম/এসকে