ফেনীর কৃতি সন্তান একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কাজী এবাদুল হক আর নেই। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে শেষ: নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। তার স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শরীফা খাতুনও ২০১৭ সালে একুশে পদক পান। তার মেয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের বালিগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালে ফেনীতে ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। ১৯৫৪-৫৫ সালে তিনি ফেনী ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। তিনি এর আহ্বায়ক ছিলেন। ফেনী সরকারি কলেজে পড়াশোনা অবস্থায় তৎকালীন ছাত্র মজলিশের (বর্তমান ছাত্র সংসদ) সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন। অধ্যাপক শরিফা খাতুনও ভাষা আন্দোলনে সাহসী ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে বাংলা ভাষার পক্ষে প্রচারণা চালান। স্কুলের ছাত্রীদের সংগঠিত করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি নিয়ে ফেনীতে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবাদুল হক। পরে ঢাকায় এসে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে হাইকোর্টে তিনি আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯০ সালে বিচারক হিসেবে হাইকোর্টে যোগ দেওয়া বিচারপতি কাজী এবাদুল হক বাংলা ভাষায় রায় লিখে নজির সৃষ্টি করেন। হাইকোর্ট বিভাগে ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর আপিল বিভাগেও তিনি এক বছর বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি সর্বোচ্চ আদালত থেকে অবসরে যান। সাবেক এই বিচারপতি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘গৌরবোজ্জল ও প্রশংসনীয়’ অবদানের জন্য সরকার ২০১৬ সালে এই ভাষা সৈনিককে একুশে পদক দেয়।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হকের জানাজা ২টা ৩০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ফেনী ট্রিবিউন এডিটর আবদুল্লাহ আল-মামুন। এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্নার মাগফিরাত কামনা করেন ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি