ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ৬টি ড্রিপ ফ্রিজ সংযোজন করা হয়েছে। এতে করে অজ্ঞাত মরদেহ সংরক্ষণসহ অন্যান্য মরদেহ রক্ষণাবেক্ষণে হাসপাতালটির দীর্ঘদিনের সমস্যা লাঘব হবে। শনিবার বিকেলে গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে এ ফ্রিজ স্থাপন করা হয়।
১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ হাসপাতালে স্থাপিত মর্গটি (লাশ ঘর) সবসময়ই অবহেলিত ছিলো। পরে বিষয়টি দৃষ্টিগোচরে এলে ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী লাশকাটা ঘরটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করার ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ফেনীর সভাপতি ডা. সাহেদুল ইসলাম কাওসার মর্গে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু দীর্ঘ ৪০ বছরেও এ মর্গে মরদেহ সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হতো।
জানা গেছে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাছে হওয়ায় এবং আশপাশের জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় প্রতিদিনই ফেনী হাসপাতালের মর্গে মরদেহ ময়নাতদন্ত করতে হয়। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ শনাক্ত হওয়ার জন্য মর্গে মরদেহ সংরক্ষণ করতে হয়। ফ্রিজার না থাকায় অনেক সময় মরদেহ নষ্ট হয়ে বিভিন্ন পোকা-মাকড়ের কবলে পড়ে।
এছাড়াও আত্মহত্যা, পুকুরে ডুবে মারা যাওয়াসহ মামলা সংক্রান্ত সব মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে হয়। এসব মরদেহ যেকোনো দিন বিকেলে নিয়ে এলে পরের দিন ময়নাতদন্তের কাজ করতে হয়। যথাযথভাবে মরদেহ সংরক্ষণ করতে না পারায় ময়নাতদন্তে নানান সমস্যার সৃষ্টি হতো।
এছাড়াও মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনের অনুরোধে এখানে মরদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দূর দূরান্ত থেকে অধিক টাকা ব্যয়ে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি ভাড়া করতে হতো। এমতাবস্থায় হাসপাতাল মর্গে মরদেহ সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজারের ব্যবস্থা হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের মাঝে স্বস্তি এসেছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ইকবাল হোসেন ভূঞা জানান, মর্গে মরদেহ রাখার জন্য ফ্রিজার না থাকায় নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হতো। শনিবার বিকেলে সরকারিভাবে ফেনী হাসপাতালের মর্গে ৬টি মরদেহ রাখার ফ্রিজার স্থাপন করা হয়েছে। এতে করে এ হাসপাতালে মরদেহ সংরক্ষণের সমস্যা লাঘব হবে।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল খায়ের মিয়াজী জানান, ফেনী হাসপাতাল মর্গে ফ্রিজারে মরদেহ রাখার চাহিদা বহু বছর আগে থেকেই ছিলো। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর হাসপাতালটিতে মরদেহ রাখার ফ্রিজারের ব্যবস্থা হওয়ায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য বিভাগের এ কর্মকর্তা।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি