উন্মুক্ত মাঠজুড়ে বাহারি পিঠা-পুলি আর ফল-ফলাদির স্টল। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য চিতই পিঠা, ভাপাপিঠা ও জিলাপী তৈরির ধুম। একই সঙ্গে চলে মাছের কাবাব আর পরটা তৈরি। হিম বাতাসে উষ্ণতা খুঁজতে কফি হাউজে। আর মঞ্চ থেকে নৃত্যের তালে ভেসে আসে গানের সুর। সোমবার রাতে এমন উৎসবমুখর পরিবেশে ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করা হয়।
সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠান শুরু হলেও বিকাল থেকেই সপরিবারে অংশ নিতে ছুটে যান বিভিন্ন শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকার জনসাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল সীমিত।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী যখন পরিবার নিয়ে হাজির তখনই শুরু হয় অনুষ্ঠানমালা। একেএকে পরিবার-পরিজন নিয়ে অংশ নিতে থাকেন জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, সিভিল সার্জন ডা. রফিক উস ছালেহীন। বালিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি শুসেন চন্দ্র শীল অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।
এছাড়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী আবু দাউদ মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. গোলাম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, পরশুরাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিম মজুমদার, সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন বাহার, ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা এসএমটি কামরান হাসান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংস্কৃতিক সংগঠক পৃথ্বিরাজ চক্রবর্তী ও সাদিয়া আফরোজের যৌথ সঞ্চালনায় কুড়েঘরের আদলে তৈরি মঞ্চে শুরু হয় নাচ-গান। পূবালী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও আৰ্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সহ বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর নৃত্য ও গান পরিবেশন করেন। শেষে র্যাফেল ড্র পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরপর বালিগাঁওয়ের আকাশ আতশবাজির আলোকচ্ছটায় বর্ণিল হয়ে উঠে।
অনুষ্ঠানের আয়োজক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, আমাদের জীবন চর্চার এক বিরাট উৎসব হলো বসন্ত। এটা আমাদের জাতির একটা পরিচয়ও বটে। মহামারীর দিনেও এই উৎসব মানুষের কাছে খুব উপভোগ্য। অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া অতিথিগণ নাচ-গান উপভোগ ছাড়াও গ্রামীণ আবহে পিঠা-পুলির স্বাদ নিতে পেরেছেন।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি