ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেছেন, ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত খুনিরা ছাড় পাবে না।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাতে নুসরাতের কবর জেয়ারত করার পর নিজাম হাজারী এমপি বলেন, ‘খুনিদের কয়েকজন ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে। অন্যরাও শিগগির গ্রেপ্তার হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে নুসরাতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। নুসরাত হত্যার বিচারে আইনী সহযোগিতা এবং আর্থিক সহযোগিতাসহ সবধরনের সহযোগিতা আমি করব।
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করতে না পারে।’
তিনি বলেন, ‘কোন কারণ ছাড়া একজন মাদ্রাসা ছাত্রীকে একজন অধ্যক্ষের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার মতো জঘন্য ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই।’
দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ‘মেয়েটিকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। এমনকি মেয়েটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠাতে সেখানকার চিকিৎসকদের মতামত নিয়েছি কিন্তু কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।’ তাই আমি সিঙ্গাপুরে অপেক্ষারত ছিলাম নুসরাতের এ কারণে আমার দেশে আসতে বিলম্ব হয়েছে।
তিনি বলেন, অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত ‘নুসরাত জাহান রাফির’ নামে সোনাগাজীতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার নামে ভবন ও একটি সড়কের নামে নামকরণ করা হবে।
নিজাম হাজারী এমপি ফেনী আসার পরপর শুক্রবার রাতে নুসরাতের গ্রামের বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে তার বাবা মাওলানা মুসা, তার মা এবং ভাইসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সান্তনা দেন এবং সমবেদনা প্রকাশ করেন। এছাড়াও নুসরাতের মামলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।
শেষে সোনাগাজী পৌর এলাকার উত্তর চর চান্দিয়া গ্রামে নুসরাতের কবর জেয়ারত করেন নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম, সোনাগাজী আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াতুল হক বিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ফেনী পৌরসভার কাউন্সিলর বাহার উদ্দিন বাহার, চর চান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মিলন, মতিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবু, বগাদানা ইউপি চেয়ারম্যান কখম ইসহাক খোকনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ।
গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে গায়ে আগুন দেয়ার পর ১০ এপ্রিল মৃত্যুর সাথে লড়াইয়ে হেরে যায়। নুসরাত সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চর চান্দিয়া গ্রামের মাওলানা মুছা মিয়ার মেয়ে। সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাতকে যৌন হয়রানি করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। ২৭ মার্চ নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অধ্যক্ষের অনুসারীরা ৬ এপ্রিল আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দেওয়ার সময় নুসরাতকে ডেকে ছাদে নিয়ে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে তিনি মারা যান।
সম্পাদনা : এএএম/এমপি