ফেনীর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাটের অচলাবস্থা কাটেনি। চতুর্থ সপ্তাহেও ব্যবসায়িক ধর্মঘট অব্যাহত ছিলো। ফলে সীমান্ত হাটে কোনো ক্রেতা যাননি, বেচাকেনা হয়নি। উদ্বুত সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে দুই দেশের সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। তবে আগামীকাল ১১ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুই দেশের সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অবস্থান কর্মসূচীর কারণে সীমান্তহাট বন্ধ থাকায় দুর দুরান্ত থেকে বহু বাংলাদেশী ক্রেতা হাটে কেনাকাটার উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে দেখা গেছে। তাছাড়া টানা চার সপ্তাহ বন্ধ থাকায় হাটের ব্যবসায়ীদের মধ্যেও কিছুটা হতাশা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফেনীর ছাগলনাইয়ার রাধানগর ইউনিয়নের মোকামিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাটের বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের অনির্দিষ্ট কালের অবস্থান কর্মসূচীর কারণে গত মঙ্গলবার চতুর্থ সপ্তাহেও অচল ছিল। সীমান্ত হাটের চোরাচালানী বন্ধ ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের একমূখী নীতি বন্ধকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে হাটের বাইরের গেটে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন। ফলে গত মঙ্গলবারও তৃতীয় সপ্তাহে সীমান্ত হাটে বাংলাদেশের কোন ক্রেতাও প্রবেশ করতে পারেনি। এনিয়ে জানুয়ারি মাসে পর পর তিন মঙ্গলবার সীমান্তহাটে ব্যবসায়িক ধর্মঘট পালিত হলো। সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার এ সীমান্ত হাট বসে।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, গত ২০১৫ সালে দুই দেশের সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের ফেনীর ছাগলনাইয়ার রাধানগর ইউনিয়নের মোকামিয়ায় ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শ্রীনগরের সীমান্তে এ সীমান্ত হাট চালু করা হয়েছিল। সপ্তাহে শুধু মঙ্গলবার এ হাট বসবে। শুরুতে কিভাবে ব্যবসা হবে, কারা ক্রেতা হবেন, একজন ত্রেতা সর্বোচ্চ কত টাকার পণ্যসামগ্রী কিনতে পারবে ইত্যাদি বিষয়ে নীতিমালা ঠিক হয়।
সীমান্ত হাটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহজাহান জানান, কোন প্রতিকার না পেয়ে তারা ১৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার প্রথম দফা সীমান্ত হাটে দোকানপাট বন্ধ রেখে হাটে প্রবেশের ফটকে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন। ফলে সীমান্ত হাটে কোন বেচাকেনা হয়নি। গত মঙ্গলবারও চতুর্থ দিন এ অবস্থান কর্মসূচী পালিত হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) ও সীমান্ত বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আক্তার উন নেছা শিউলী বলেন, ব্যবসায়িদের অভিযোগ সম্পর্কে প্রশাসন অবগত আছেন। এসব বিষয় নিস্পত্তির জন্য ইতিমধ্যে দুই দেশের সীমান্ত বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সমস্যাগুলি তুলে ধরে প্রতিকারও চাওয়া হয়েছে। গত ২৯ জানুয়ারি সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে ভারতীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত ছিল। তাঁরা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে ওই সভা স্থগিত করেছে।
তিনি বলেন, আগামীকাল ১১ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। ওই সভায় আলাপ আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভুত পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ মিমাংসা ও বাজার চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
সম্পাদনা : এএএম/এমপি