আজ ৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এদিনে রক্তঝরা দীর্ঘ সংগ্রামের পথ মাড়িয়ে মুক্ত হয় ফেনী। সেই থেকে দিনটি ফেনী মুক্ত দিবস হিসেবে পরিচিত। এক টুকরো পতাকা আর স্বতন্ত্র পরিচয়ের জন্য এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার এক ঐতিহাসিক দিবস ফেনী মুক্ত দিবস।
বছর ঘুরে এলেই নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালিত হয় দিবসটি। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি কারণে সীমিত পরিসরেই দিবসটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। কর্মসূচির মধ্যে সকাল ১০টায় কলেজ রোডের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হবে। সেখানেই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
৬ ডিসেম্বর ভোর থেকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা ফেনীর পূর্বাঞ্চল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ২নং সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে দলে দলে ফেনী শহরে প্রবেশ করতে থাকে। জড়ো হওয়া মুক্তি সংগ্রামীরা মিছিল থেকে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দেয়। শ্লোগান শুনে প্রথমে শহরবাসী বিশ্বাস করতে পারেনি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে অনেকেই পরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের মিছিলে দেখে উৎপুল্ল হয়ে উঠেন।
একপর্যায়ে সাধারণ মানুষ মিছিলে শরিক হতে শুরু করেন। স্বত:স্ফূর্ত প্রতিরোধের লক্ষন দেখে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাক বাহিনী আর তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শাম্স বাহিনী ফেনীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পালিয়ে এসে ফেনী শহর হয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। এভাবেই দীর্ঘ নয় মাসের বজ্রকঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মুক্তিকামীরা লাল-সবুজের এক টুকরো পতাকা ফেনীর জমিনে উড্ডিন করেন। এই রনাঙ্গনে ১০ নভেম্বর ২ জন পাক সেনা অফিসার সহ ৭২ জন পাক সেনা আত্মসমথর্ন করেন। বিলোনিয়া যুদ্ধ একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করেনেয়। এটি বর্তমানে আমেরিকা সহ বিশ্বের অনেক সামরিক একাডেমিতে পাঠ্য।
অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য ফেনীর ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত করা হয়। খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৪ জন বীর উত্তম, ৭ জন বীর বিক্রম এবং ২০ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি