আজ

  • শনিবার
  • ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবন সায়াহ্ণেও বিএনপির জন্য ভালোবাসা মন্টু মিয়ার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • জীবন সায়াহ্ণেও বিএনপির জন্য ভালোবাসা ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বৈঠারপাড় মিয়া বাড়ির আবু ওবায়েদ মন্টু মিয়ার (৮৫)। জাগ দল থেকে বিএনপিতে এসে এখনো হৃদয় জুড়ে আছে বিএনপি। উপজেলা পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন চাওয়া-পাওয়ার হিসেব কষেননি কখনো। বিএনপির এগিয়ে যাওয়া তাকে যেমন আন্দলিত করে তেমনি নানা প্রতিকুলতায় পিছিয়ে পড়া দেখে ব্যথিত হন। মন্টু মিয়ার সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের তিনি স্মৃতিচারণ করেন বর্ণিল দিনগুলোর। এখন বাধ্যর্কে উপনীত, তার পরও প্রিয় দলের সবকিছু তাকে নাড়া দেয়, তিনি সকলের দোয়া কামনা করেছেন।

    আবু ওবায়েদ মন্টু মিয়া জানান, ফেনী সরকারী কলেজে পড়ালেখার সময় জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। সম্পৃক্ত হন ভাসানী ন্যাপের সাথে। পরবর্তীতে ওয়াপদাতে চাকুরী করেন। চাকুরী ছেড়ে আবার ফিরেন রাজনীতিতে। ১৯৭৭ সালে ব্যারিষ্টার মওদুদ নেতৃত্বে জাগ দলে গঠিত হয়। দাগনভূঞা উপজেলা কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটিতে দাগনভূঞা সদর ইউনিয়নের সেলিম চেয়ারম্যানকে সভাপতি ও কবির আহাম্মদ সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কমিটিতে আবু ওবায়েদ মন্টু মিয়া, নুর আহাম্মদ চট্টু মিয়া, ছেরাজ চেয়ারম্যান, মফিজ মিয়া, সামছু মিয়া, মনির আহাম্মদ, গাউস উদ্দিন, মাহমুদুল হক মাদুকে সদস্য করা হয়। এরপর ১৯৭৯ সালে বিএনপি তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। বিএনপির উপজেলা কমিটিতে তিনি সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়া পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়ন কমিটিরও সাধারণ সম্পাদক ও পরে সহ-সভাপতি হন। ১৯৮৬ সালে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন পর্যন্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের জন্য মরিয়া হয়ে মাঠে কাজ করেন। এসব অঞ্চলে দলের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন। এতে বিরোধী দলের শক্র হয়ে উঠেন তিনি। ১৯৯৬ সালের আগস্ট মাসে স্থানীয় ক্যাডাররা তার বাড়ি ঘরে হামলা, ভাংচুর ও তচনছ করে। হামলায় তার স্ত্রী পেয়ারা বেগম অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।

    এদিকে ৬ ছেলে ১ মেয়ের জনক আবু ওবায়েদ মন্টু মিয়া ১৯৭১ সালে ফেনী কলেজ ইউটিসি থেকে ট্রেনিং প্রাপ্ত ছিলেন ফলে বিএলএফ এর কমান্ডার ভিপি জয়নালের সাথে যুক্ত হন। পরবর্তীতে ফেনী থেকে আগর তলা যান।

    অপরদিকে তিনি নিজ বাড়ির দরজায় আমুভূঞারহাট হাসানিয়া দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি বাতশিরি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন এবং পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে তিনি বৈরাগীরহাট হাইস্কুলের পরিচালনা কমিটিতেও দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে তিনি আমুভূঞারহাট মসজিদ কমিটিরও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটিসহ সামাজিক নানা কর্মকান্ডের সাথে জড়িত আছেন। বর্তমানে তিনি শ্বাসকষ্ট, পোস্টেট গ্ল্যান্টের সমস্যসহ নানা ভুগছেন। তিনি সকলের দোয়া কামনা করেছেন।

    বাবার আদর্শকে ধারণ করে বড় ছেলে এ এইচ এম. মোস্তফা কামাল বাবলু দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন। তিনি ফেনী জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম কুয়েত এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি স্থানীয় পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের রাজনীতির নিয়মিত খোঁজ খবর রাখেন। মানবকল্যানে কাজ করতে তিনিও দৃঢ প্রতিজ্ঞ। বিএনপির লড়াকু সৈনিক তার পিতা আবু ওবায়েদ মন্টু মিয়ার জন্য ফেনীবাসীসহ সকলের দোয়া চেয়েছেন।

    জীবন সায়াহ্ণে আবু ওবায়েদ মন্টু মিয়া বলেন, পূর্ব চন্দ্রপুর সহ গোটা দাগনভূঞায় বিএনপির সমর্থক ও নেতাকর্মীর অভাব নেই কিন্তু নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে। এ অবস্থার কথা মনে হলে মন ঢুকরে কেঁদে উঠে। যোগ্য নেতৃত্ব ফেলে বিএনপিকে ঠেকিয়ে রাখার কোন শক্তি নেই। অযোগ্য ও কর্মীবান্ধব নয় এমন লোককে দলের দায়িত্ব দিলে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরন কঠিন হবে। সৎ যোগ্য ও কর্মী বান্ধব নতুন নেতৃত্বের হাতে পতাকা তুলে দিলে তা কখনো অমর্যাদা হবে না। দল আলোর পথে সম্মুখপানে এগিয়ে যাবে।

    ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090