ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি ইমরান হোসেন মামুন ও ইফতেখার হোসেন রানা।
সোমবার বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দি শেষে সন্ধ্যায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. ইকবাল সাংবাদিকদের তাদের জবানবন্দির ব্যাপারে ব্রিফ করেন।
এসময় তিনি বলেন, ওই দুই আসামি আদালতে বলেন, হত্যাচেষ্টার ঘটনার দিন তারা দুইজন গেইট পাহারার দায়িত্বে ছিল। যাতে করে ছাদে কিলিং মিশনে কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে এবং কিলিং মিশন নিরাপদে সম্পন্ন করা যায়। এছাড়া নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যাবতীয় যত পরিকল্পনা হয়েছে সব বিষয়ে তারা জানতো।
এসময় পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা আরো জানান, এ মাসের মধ্যেই এ হত্যা মামলার অভিযোগ পত্র তারা দাখিল করবেন।
এর আগে শনিবার (২০ এপ্রিল) রাঙামাটি ও কুমিল্লা পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার ভোর রাতে রাঙ্গামাটি সদরের টিঅ্যান্ডটি আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে রানাকে গ্রেফতার করা হয়। সোনাগাজীর চর গনেশ এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে রানা। ওই হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে রাঙ্গামাটি চলে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। গ্রেফতার রানা নুসরাত হত্যাকাণ্ডে পরিকল্পনাকারীদের একজন বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকা থেকে এমরান হোসেন মামুনকে পুলিশ আটক করেছিলো। এমরানের বাড়ি সোনাগাজীর চর গনেশ এলাকায়। গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাকির হোসাইন এর আদালত তাদের দুই জনের জন্য ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা। পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যান। শ্লীলতাহানির মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি ছিলেন সিরাজ উদ দৌলা। এ ঘটনার পর হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী সিরাজ উদ দৌলাসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ১১ জন।
সম্পাদনা : এএএম/এইচআর