সাগরের তলদেশে রয়েছে রহস্যঘেরা একটি জগৎ। সেখানে আছে নানা প্রজাতির মাছ। সবারই জানার ইচ্ছে, সাগরের তলদেশে কি আছে। সেই কৌতূহল মেটানোর জন্য কক্সবাজারে গড়ে তোলা হয়েছে ফিশ ওয়ার্ল্ড অ্যাকুরিয়াম।
পর্যটন মৌসুমে পর্যটন শহর কক্সবাজার এখন পর্যটকদের পদভারে মুখরিত। এখানে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ফিশ ওয়ার্ল্ড অ্যাকুরিয়াম। এর নাম রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড অ্যাকুরিয়াম। এটি দেখার জন্য পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। ঢাকা থেকে আসা শাহরিয়ার জামান বলেন, কক্সবাজারে এমন একটি ফিশ অ্যাকুরিয়াম গড়ে উঠেছে ভাবতেই অবাক লাগে যা পৃথিবীর উন্নত দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাজানো হয়েছে। ঢুকেই দেখা যায় এর সৌন্দর্য; মাথার উপরে মাছ ভেসে বেড়াচ্ছে, পাশেই হাঙর ঘুর ঘুর করছে।
কুমিল্লা থেকে আসা আরেক পর্যটক নাসির বলেন, প্রথমে সমুদ্র পাড়ে গেলেও পরে জানতে পারি কক্সবাজারের ঝাউতলায় একটি ফিশ অ্যাকুরিয়াম রয়েছে। এটি দেখতে পরিবারসহ এসেছি। সবাই ঘুরে দেখলাম। সত্যিই বিস্ময়কর; এখানে আসার পর যে কারও মনে হবে যে, সাগরের তলদেশে এসেছি। চারপাশে খেলা করছে বর্ণিল প্রজাতির মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী। এর নান্দনিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ সবাই।
কক্সবাজার শহরে আন্তর্জাতিক মানের এই ফিশ অ্যাকুরিয়াম কমপ্লেক্সটির অবস্থান। ইতিমধ্যে এটি পর্যটকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। সমুদ্রসৈকত দেখতে আসা পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকায় এখন যোগ হচ্ছে এই অ্যাকুরিয়াম। পর্যটন শিল্প বিকাশে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
এতে বিচরণ করছে প্রায় ১০০ প্রজাতির মাছ। বিরল প্রজাতির মাছসহ এখানে আছে হাঙর, পিরানহা, শাপলাপাতা, পানপাতা, কাছিম, কাঁকড়া, সামুদ্রিক শৈল, পিতম্বরী, সাগর কুচিয়া, বোল, জেলিফিশ, চেওয়া, পাঙ্গাস, আউস ও আরও অনেক মাছ এবং জলজ প্রাণী।
রেডিয়েন্ট ফিশ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা শফিকুর রহমান চৌধুরী জানান, প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এই সেন্টার। এতে আছে আটটি জোন। এর মধ্যে রয়েছে থ্রি-নাইন ডি মুভি দেখার নান্দনিক স্পেস, দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি, ছবি তোলার আকষর্ণীয় ডিজিটাল কালার ল্যাব, শপিং স্পেস, লাইভ ফিশ রেস্টুরেন্ট, এবাদত খানা, শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা, বিয়ে বা পার্টি করার কনফারেন্স হল ও ছাদে প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি বার-বি কিউ আয়োজন করার ব্যবস্থা। এ ছাড়া রয়েছে সুপরিসর পার্কিং ও লাগেজ রাখার লকার। এখানে এসে কোনো বিরক্তি ছাড়াই চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা কেটে যাবে। পুরো সেন্টারে আছে নিরাপত্তা বেষ্টনী ও সিসিটিভির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা। ফিশ ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ ফি ৩০০ টাকা। এ ছাড়া বাচ্চাদের জন্য আছে সুলভ মূল্যের টিকিটের ব্যবস্থা। সময় ও উপলক্ষ অনুযায়ী টিকিটের মূল্যের ওপর ৫-১০% ডিসকাউন্ট থাকে।
রেডিয়েন্ট ফিশ সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার ও ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন জানান, কক্সবাজারে সমুদ্রসৈকতের আশপাশে দেখার মতো উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু নেই। যেসব পর্যটন স্পট রয়েছে, তা শহর থেকে দূরে, তাই পর্যটক ও স্থানীয়দের বিনোদনের জন্য এটি গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিদিনই এখানে মানুষের ভিড় বাড়ছে। এ ছাড়া অধিকাংশ শিশুকিশোর সামুদ্রিক ও মিঠা পানির মাছ সম্পর্কে অজ্ঞ। তাই তাদের বিভিন্ন মাছ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। এটি কক্সবাজারবাসীর জন্য গৌরবের।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি/এপি