সোনাগাজী উপজেলার চর মজলিশপুর ইউনিয়নের চান্দলা গ্রামে প্রথম শ্রেনীর ছাত্রকে সোমবার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে ২ জনকে আটক করেছে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ। ঘটনায় সোনাগাজী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার চান্দলা প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষার্থীরা রিফাত হত্যার বিচার দাবীতে মানববন্ধন করেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, চান্দলা গ্রামের রিকসা চালক রিপনের ছেলে চান্দলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেনীর ছাত্র মোশারফ হোসেন রিফাত প্রতিদিনের মতো বিকাল বেলায় নিজ ঘরের সামনে খেলছিল। এ সময় একই বাড়ীর মোমিনুল হকের ছেলে ওমর আলী বাবু (১৮) রিফাতকে ফুসলিয়ে খেলতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করে বাড়ি থেকে অনেক দূরে ধান ক্ষেতের একটি গর্তে তার লাশ ফেলে দেয়। এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও রিফাত বাড়ি না ফেরায় চারদিকে তাকে খুঁজতে থাকে পরিবারের লোকজন এক পর্যায়ে এলাকায় মাইকিংও করা হয়। এলাকাবাসী রাত প্রায় ৯ টা পর্যন্ত খুঁজে না পেয়ে বাড়ির ওমর আলী বাবুকে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসা করলে সে স্বীকার করতে রাজী না হলে এলাকাবাসী তাকে মারধর করে। এতে সে রিফাতকে হত্যার কথা স্বীকার করে ও এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। পরে ফুতে রাখা গর্ত থেকে রিফাতের লাশ উদ্ধার করে।
এলাকাবাসী বাবু ও তার পিতা মোমিনুল হককে আটক করে থানায় খবর দিলে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে ও নিহত শিশুর লাশ থানায় নিয়ে যায়। মঙ্গলবার দুপুরে ফেনী সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে রিফাতের লাশ দাফন করা হয়। এঘটনায় নিহতের চাচা শিপন বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করছে। এদিকে মঙ্গলবার চান্দলা প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষার্থীরা রিফাত হত্যার বিচার দাবীতে মানববন্ধন করেছে। এসময় তারা দোষীদের দৃস্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
চান্দলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন টিপু জানায়, নিহত ছাত্রটি সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে এসে পরীক্ষা দিয়ে গেছে। সে ছাত্র হিসাবে ভালো ছিল। তার রোল নাম্বার ছিল ৫। সে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসত। আমরা তার হত্যাকারীর দৃস্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি।
ছেলের মামা খোরশেদ আলম জানায়, ছেলের পিতা, রিকসা চালক একদম সহজ সরল পড়ালেখা জানেনা, রিকসা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছে। সে দুই ছেলের মাঝে বড় ছেলেকে হারিয়ে পাগলের মত প্রলাপ বকছে। মা জাহেদা বেগম ছোট অবুঝ শিশুকে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে ছেলে কে এনে দেয়ার আকুতি জানাচ্ছে।
সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এলাকাবাসীর সহযোগীতায় অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদনা : এএএম/এমই