মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আসসালামু আলাইকুম।
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষক শিক্ষার মেরুদণ্ড। যুগযুগ ধরে শিক্ষকগণ মহান এই পেশার প্রতি সম্মান রেখে উন্নত জাতি গঠনে ভূমিকা পালন করে আসছেন। সভ্য জাতি, সভ্য দেশ, সু-নাগরিক, সৎ ও যোগ্য রাজনীতিবীদ, মেধাবী শিক্ষক এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বস্তরে যোগ্যলোক সৃষ্টি করে থাকেন শিক্ষকসমাজ।
দুঃখের বিষয় হলো এই যে, শিক্ষকদের হাতে গড়া (কিছুসংখ্যক) ছাত্র বড় হয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে শিক্ষকদের সম্মানের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে অসম্মানই বেশি প্রদর্শন করেন। এটা জাতির কাম্য হতে পারে না। শিক্ষা জাতীয় সম্পদ। যেহেতু শিক্ষা প্রসার ও রক্ষার দায়িত্ব শিক্ষকদের। তাই শিক্ষকগণ জাতীয় সম্পদ হওয়া উচিৎ নয় কী??? অথচ জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকবৃন্দ যখন প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করছেন তখন কোন কোন মহল থেকে শিক্ষক সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য আসে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। একটি শক্তিশালী, সৎ -যোগ্য দেশপ্রেমিক জাতিগঠনের লক্ষ্যে সকল স্তরের শিক্ষাব্যবস্থাকে একযোগে জাতীয়করণের আওতায় আনতে হবে।
শিক্ষার মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় রাখা উচিত নয়। বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ শুধু শিক্ষকের স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনে নয়,জাতির স্ট্রং ও অক্ষত মেরুদন্ড গড়ার স্বার্থে প্রয়োজন। শিক্ষার সমমান রক্ষার্থে সারা দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে জাতীয়করণের বিকল্প নেই। জাতীয়করণ করা হলে সারা দেশে শিক্ষকদের বদলী সিস্টেম চালু হবে। পিছিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠান গুলো এর ফলে ভালো শিক্ষক পাবে। জাতীয়ভাবে প্রশিক্ষণের আওতায় এনে শিক্ষকদের সহজে আরো দক্ষ করে গড়ে তোলা যাবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাব্যয় কমে আসবে। হাতে গোনা কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিজ নিজ সন্তানদের ভর্তি করাতে অভিভাবকদের যে অসম প্রতিযোগিতা চলছে, প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টারের পেছনে ঘুরে যে পরিমান অর্থ অপচয় হচ্ছে তা অনেকাংশে বন্ধ হবে। সমগ্র দেশে জাতি অনায়াসে বৈষম্যমুক্ত শিক্ষার ফল ভোগ করার সুজোগ পাবে।মেধাবীরা পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে বেছে নেবে। এর ফল জাতি সানন্দ চিত্তে স্থায়ী ভাবে আস্বাদন করতে পারবে। সুতরাং দেশ-জাতির কল্যাণে শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার ও বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ অনিবার্য প্রয়োজন।
তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা’র প্রতি অনুরোধ আপনার অতীত জীবনের অসংখ্য সাহসী পদক্ষেপের মত বেসরকারি শিক্ষাকে জাতীয়করণের ঘোষণা আপনাকে এনে দেবে জাতীয় জীবনে এক অনন্য ও গৌরবোজ্জ্বল স্থান। যা জাতির মানসপটে চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
লেখক:
জাহাঙ্গীর আলম,
সহকারী অধ্যাপক।