ফেনীর পরশুরামে একটি সুত্রবিহীন হত্যা মামলায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন- শিশির কুমার দে (২০) ও মো. ইব্রাহিম (২২), মো. আরমান হোসেন মুন্না (২৭) ও মো. রাকিবুল ইসলাম (২৬)। দুইজনের আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও শেষ মহুর্তে হয়নি। শুক্রবার বিকেলে চারজনকে ফেনী জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১০ মার্চ রাত ৯টার দিকে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার খন্ডল বাজারে ধান বিক্রি করে বাজার থেকে জসিম উদ্দিন (৫৮) নামে এক ব্যক্তি বাড়ী ফিরছিলেন। বাজার থেকে কিছুদূর যাওয়ার পর একদল ছিনতাইকারী মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালিত অটোরিকসা যোগে তার গতিরোধ করে। তারা প্রথমে জসিম উদ্দিনের পকেট থেকে ধান বিক্রির টাকা ও একটি স্যামসং এন্ড্রয়েড মুঠোফোন সেট ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ছিনতাইকারীদের সাথে ভিকটিম জসিম উদ্দিনের ধস্তাধস্তি হয়।
এক পর্যায়ে ভিকটিম জসিম উদ্দিন একজন ছিনতাইকারীকে ঝাপটে ধরেন। তখন অন্য ছিনতাইকারীরার ভিকটিম জসিমকে এলোপাথাড়ী ছুরিকাহত করে পকেটের টাকা ও মুঠোফোন সেট নিয়ে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় ভিকটিম জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থলের পাশে জনৈক আবুল কশেম নামে একজনের বাড়ীতে গিয়ে তাকে বাঁচানোর আকুতি জানায়। কাশেমের বাড়ীর লোকজন তখন ভিকটিম জসিমকে দ্রুত পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম জসিমকে মৃত ঘোষনা করেন।
এঘটনায় কোন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী না থাকায় নিহত জসিমের পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত আসামীর বিরুদ্ধে পরশুরাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরশুরাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেনকে এ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। পুলিশ নানা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তদন্ত করে ঘটনার তিন মাস পর গত বৃহস্পতিবার রাতে কোন ধরনের সুত্র বিহীন মামলার চারজন আসামীকে উপজেলার বক্সমাহমুদ বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানায়, ধৃত চারজনের মধ্যে দুই আসামী পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা ৭ জন পরিকল্পিত ভাবে ঘটনার দিন রাতে জসিম উদ্দিনকে বাড়ী যাওয়ার পথে গতিরোধ ও ছুরিকাহত করে টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বাকী তিন আসামী পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম সুত্রবিহীন মামলার চার আসামীকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেলে তাদের চারজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফেনী ট্রিবিউন/এটি/এএএম