আজ

  • শনিবার
  • ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  • ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

একুশে বই মেলায় জাহাঙ্গীর আলমের গল্প গ্রন্থ “ভালোবাসা রং বদলায়”

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • যাপিত জীবনে প্রতিটি মানুষ এক একজন অভিনেতা। ভেতরে-বাইরে, পরিবারে, সমাজে, কর্মক্ষেত্রে মানুষ প্রতিনিয়ত অভিনয় করছে। এই অভিনয় নিজের জন্য, অপন স্বার্থে। অন্যের চোখে গ্রহণযোগ্য হতে, অন্যের ভালোবাসা বিশ্বাস অর্জন করতে, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরন্তর চলছে অভিনয়। যিনি যতো নিপুণ অভিনেতা, যার অভিনয় যতো সুনিপুণ সত্য এবং নিখুঁত তিনি ততো সফল। কেউ স্বরূপে অভিনয় করছে, কেউ মুখোশের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে অভিনয় করছে।

    কিছু অভিনয় ভালোলাগা-ভালোবাসার, কিছু অভিনয় মেকী চরিত্রের। মুখোশে লুকিয়ে কেউ প্রেমের নিখুঁত অভিনয় করে চলে,কেউ প্রেমপ্রেম খেলে আর কেউ প্রেমের ঘর বাঁধে। কেউ সাধু হয় কেউ সাধু সাজে। জীবনের এই রঙ্গমঞ্চে যার যেমন অভিনয় তার তেমন পরিচয়। তাইতো মানুষ প্রতিনিয়ত বদল করছে আপন রূপ ও প্রকৃতি। স্বভাবের এই পালাবদল ঘটিয়ে চলছে নিরন্তর । দিনের আলোয় একরূপ রাতের আধাঁরে অন্যরূপ। এই রূপবৈচিত্র্য মানুষের মননশীল চেতনা ও চিন্তা জগতেকে আলোড়িত করে এবং মানবজীবনকে প্রভাবিত করে। মোহগ্রস্ত হয়ে চেতন-অবচেতন মনে ছুটে যায় মনের গতিতে। হারিয়ে যায় অদম্য প্রাপ্তির মোহে। এই প্রাপ্তির রয়েছে নানান বৈচিত্র্যময়তা। কেউ অর্থ ও বিত্তের পিছে ছোটে, কেউ স্বার্থের পিছে। কেউ গুণে মুগ্ধ হয়, কেউ রূপের পিছু নেয়। কেউবা রূপ-গুণের হাতছানিতে জীবনব্যাপী ছুটে। একজীবনের কতো চাওয়া,বাঁধন হারা গতি। রূপের তৃষ্ণায় বিভোর হয়ে কাতর মন ছুটে যায়, যেতেই থাকে, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সমন্বয়হীন দিগ্বলয়ে। এই যাত্রার যেন শেষ নেই, নেই কোন সুনির্দিষ্ট গন্তব্য। স্বপ্নীল এই জীবনের যেন বয়স নেই, বার্ধক্য নেই। তবে অনন্ত যৌবন আছে, ক্লান্তি আছে, হতাশা আছে।

    জীবনসায়াহ্নে জীবন -মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রূপজ তৃষ্ণায় কাতর মন অনন্ত কাল বাঁচতে চায়। রূপ ছলনায় মোহাবিষ্ট হয়ে জীবন পরিক্রমায় মানুষ তখনো স্বপ্নবোনে। জীবন অবধি প্রতিটি মানুষের অনন্ত কামনার বাসনা গুলো বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষিত হয়।ছুটে যায় একেবেঁকে। কখনো ঘরেকে বাহির কেরে, আবার বাহিরকে করে ঘর। রূপের কোন ধর্ম নেই,বর্ণ নেই, আছে মোহিনী শক্তি। এই রূপশক্তি যার আছে সে রূপপূজারী মানুষদের মাতাল করে, বিভোর করে, কাছে টানে। কখনো আপন করে কখনো করে পর। কখনো সংসার গড়ে কখনো ভাঙে ঘর। রূপের মোহ দৃষ্টিকে জলসে দেয়। রূপেরআলো চোখ ধাঁধানো বর্ণিল। রূপের যৌবন আছে, বাদ্ধক্যও আছে। রূপ সব মানুষ স্পর্শ করে,ইশারায় আহবান করে। কেউ সশরীরে ছুটে যায়, কারো আবেগ ছুটে যায়। কেউ অব্যক্ত এক অনুভবে কল্পনায় যেতে থাকে বহুদূর। মানবজীবনে এই রূপের খেলা পরিণত বয়সের সব মানুষকে নাড়া দেয়, প্রেরণা যোগায়। কিন্তু রূপের মোহ ক্ষণস্থায়ী, গুণের মোহ চিরস্থায়ী। মানুষ গুণের চেয়ে রূপের সেবা বেশি করে। গুণের প্রতি যদিও মোহ থাকে না তবে গুণের প্রয়োজনীয়তা কখনো ফুরায় না। বরং রূপের মোহে পালাবদল আসে।

    এই পালাবদলের খেলায় সে এগিয়ে থাকে, যে যাপিত জীবনে অন্ধকারে বাস করে। কম আলোতে তখন তার চোখ জলসে যায়। রূপের মোহ মানুষকে ধ্বংস করে, নিঃস্ব করে। এই মোহ বড়ই ছলনাময়ী, যাদুকরী। রূপের মোহে আক্রান্ত হয়ে এযাবৎ কালে কতো মানুযের জীবন হয়েছে বিপন্ন। রং বদলের এই খেলায় মানবসমাজ ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে পরকীয়ার বিষাক্ত ছোবলে বারংবার। কতো নারী-পুরুষের সাজানো ঘর ভেঙেছে,কতো যুবক-যুবতি রূপের কাছে হেরে গিয়ে আত্মহনন করছে তার হিসেব কি লেখা আছে? না, নেই। থাকার কথাও নয়। রূপের আরাধনা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। এমন কিছু বাস্তব অনুভূতি থেকে লেখা “ভালোবাসা রং বদলায়” গল্পগ্রন্থটি।

    ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090