ফেনীর সোনাগাজীতে স্কুল পড়ুয়া জামায়াত নেতার মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে ভুক্তভোগী ছাত্রী। মঙ্গলবার বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সামসাদ জাহান খানের আদালতে ২২ ধারায় এ জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি ও চর মজলিশপুর ইউনিয়নের দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল হাই এর কন্যা ও ছেলেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রাইভেট পড়াতো উপজেলা ছাত্র শিবিরের উত্তর শাখার সাবেক সভাপতি হামিদুর রহমান আজাদ। একপর্যায়ে জামায়াত নেতার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে (নবম শ্রেনির) ছাত্রীর সাথে আজাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত রোববার রাত ৮টার দিকে ওই ছাত্রীর জন্মদিনের উপহার দিতে গিয়ে রাতে তাদের ঘরের একটি কক্ষে লুকিয়ে থাকে আজাদ। রাত একটার দিকে ওই জামায়াত নেতা ও তার পুত্র দীন মোহাম্মদ টের পেয়ে আজাদকে আটক করে বেধড়ক পিটিয়ে ঘরের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালায়।
খুঁটিতে বাঁধা আজাদের ছবি তুলে দীন মোহাম্মদের ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করে। পোস্টে জামাত নেতার ছেলে উল্লেখ করে, ‘তাকিয়া বাজারে আশ্রাফ আলী কবিরাজ বাড়িতে ধরা খেয়েছে স্বর্ন চোর, রাত তিনটায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেছে, পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’ মুহূর্তের মধ্যে পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ আজাদকে উদ্ধার করে। সোনাগাজী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। পরে আজাদকে আসামি করে তার মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন জামাত নেতা।
অপর দিকে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে কথিত স্বর্ন চুরির অভিযোগ এনে খুঁটির সাথে বাঁধা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন আজাদের বাবা বেলাল হোসেন।
সোমবার বগাদানা ইউনিয়নের পাইকপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শিবির নেতা আজাদ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জামাত নেতার ছেলে দীন মোহাম্মদকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার দুই আসামীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। স্কুল পড়ুয়া ওই ছাত্রীর আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এপি